৪ হাজার কোটি রুপি! বাংলাদেশের হিসেবে যা দাঁড়ায় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার মতো! বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি কাজ করা সম্ভব এই টাকা দিয়ে। ভারতের অর্থনীতি বিষয়ক গোয়েন্দা সংস্থা, সংক্ষেপে ‘ইডি’ নামে পরিচিত, জানাচ্ছে যে গতকাল তাঁদের হাতে ধরা পড়া একটি আন্তর্জাতিক জুয়াড়ি চক্র প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার কোটি রুপির লেনদেন করে থাকে।
গত শুক্রবার ভারতের ভাদোদারা শহরের অদূরে একটি খামারবাড়ি থেকে কিরণ মালা ও টমি পাটেল নামের দুজন বাজিকরকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১৫টি ল্যাপটপ এবং ১০০টি মোবাইল ফোন। এ সময় আরও নানারকমের ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি পাওয়া যায় বলেও জানায় সূত্র। পরে কিরণ মালার মানি নগরের বাসায় রাতে হানা দেয় ইডি। সেখান থেকেও জুয়া সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু আলামত পাওয়া যায়। আরও পাওয়া যায় ৪০টি রিভলবারের কার্তুজ। কিরণ ও টমি পাটেলের পর একই চক্রের আরও ১১ জন জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করে ইডি। একজন জুয়ারির কাছ থেকে পাওয়া যায় ২৫ লাখ রুপি।
জানা যায়, টমি পাটেল ২০১৩ সালেও একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল আইপিএলে ম্যাচ গড়া-পেটায় অংশ নেয়ার। পরে অবশ্য জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি। ইডির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, চলতি বিশ্বকাপেও জুয়ার আসর পেতে বসেছিল এই চক্রটি। কোনো কোনো ম্যাচের জন্য নাকি সর্বোচ্চ ২০ কোটি রুপি বাজির কারবারও হয়েছে! পাকিস্তান এবং দুবাই ভিত্তিক কয়েকটি বাজিকর চক্রের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিল তারা।
এ কাজে তারা ব্যবহার করে মোবাইল ফোন এবং স্কাইপের মতো অনলাইনভিত্তিক যোগাযোগের মাধ্যম। জুয়ার জন্য জনপ্রিয় বেটফেয়ার নামের একটি ওয়েবসাইটও ব্যবহার করে তারা। টাকা লেনদেনের জন্য ‘হাওয়ালা নেটওয়ার্ক’ নামের একটি সনাতন পন্থার আশ্রয় নেয় তারা। প্রশাসন ও গোয়েন্দা নজরদারি এড়িয়ে অর্থ আদান-প্রদানের বহু পুরোনো একটি উপায় এই ‘হাওয়ালা’ পদ্ধতি। বাংলাদেশে যেটি ‘হুন্ডি’ নামে পরিচিত।
গ্রেপ্তার হওয়া ১৩ জনকে ভাদোদারা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভারতের প্রচলিত ‘মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ’ আইন অনুযায়ী পুলিশের প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ইডি অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে না। তাই ইডির অপেক্ষা এখন পুলিশি প্রতিবেদনের। আন্তর্জাতিক মাফিয়া চক্রের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ আছে কী না সেটাও খতিয়ে দেখবে ইডি। তথ্যসূত্র: পিটিআই।