কোমলমতি স্কুল-ছাত্রদের পিঠে ওঠা সেই রসিক নেতার বিরুদ্ধে মামলা
চাঁদপুর প্রতিনিধি : চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় শিক্ষার্থীদের পিঠকে সেতু বানিয়ে জুতা পায়ে তার ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে।
বুধবার রাত ১১টার দিকে কাদির গাজী নামের এক অভিভাবক বাদী হয়ে হাইমচর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর হোসেনসহ ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
হাইমচর থানার ওসি সৈয়দ মাহাবুবুর রহমান জাতিরকন্ঠকে জানান, মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও মামলায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হুমায়ূন পাটোয়ারী, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মনসুর আহমেদ ও এমএ বাশারকে আসামি করা হয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, গত সোমবার উপজেলার নীলকোমল ওসমানীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পিঠকে সেতু বানিয়ে তার ওপর দিয়ে জুতা পায়ে হেঁটে যান প্রধান অতিথি উপজেলার চেয়ারম্যান নূর হোসেন। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চেয়ারম্যানের পক্ষেই অবস্থান নিয়ে কথা বলেন।
চেয়ারম্যানের এমন কাণ্ডে বুধবার সকালে অভিভাবকরা জানান, শিশুদের মানবসেতুতে হাঁটার সময় আওয়ামী লীগের ওই নেতার পায়ে জুতা ছিল। শিশুদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ অমানবিক ও জঘন্য। আমরা এর নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানাই। তবে নীলকোমল ওসমানীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, প্রতিবছর স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে আমরা ছাত্রদের নিয়ে মানবসেতু করে থাকি। তারই অংশ হিসেবে অতীতের মতো এবারও শিশুদের নিয়ে এ আয়োজন করা হয়।
ওই মানবসেতুতে শিশুদের অনুরোধেই প্রধান অতিথি চাঁদপুর হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারী হেঁটেছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। এ ব্যপারে চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারী জানান, প্রতিবছর ওই বিদ্যালয়ে শিশুদের নিয়ে একই অনুষ্ঠান হয়। বাচ্চাদের অনুরোধে ওই মানবসেতুতে আমি উঠেছিলাম। এ সময় খুশি হয়ে তাদের আমি ৫ হাজার টাকাও দিয়েছি।
সারাদেশে নিন্দার ঝড় ওঠলে বুধবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) সারোয়ার জাহানকে এ ঘটনার তদন্ত ভার দেয়া হয়েছে। তাকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।