কাল পুরান ঢাকায় জমবে বাহারি ঘুড়ি উৎসবে
দীনা করিম: কাল পুরান ঢাকায় জমবে বাহারি ঘুড়ি উৎসবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে আগে এ উৎসবটি সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে পুরান ঢাকায় সাড়ম্বরে পালিত হয় এ দিনটি। উৎসবে অংশ নেন সব ধর্মের সব বয়সী মানুষ। শোভা পায় নানা রং আর বাহারি ঘুড়ি। মাঘ মাসের প্রথম দিনটি পুরান ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব। একে ঘুড়ি উৎসব বা পৌষ সংক্রান্তীও বলা হয়।
এই উৎসবে সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় আতশবাজী ও ফানুস উড়ানো। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এসব এলাকায় চলেছে আতশবাজীর খেলা। সাকরাইনে পুরান ঢাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে জামাইদের নাটাই, বাহারি ঘুড়ি উপহার দেওয়া এবং পিঠার ডালা পাঠানো একটি অবশ্য পালনীয় অঙ্গ। ডালা হিসেবে আসা ঘুড়ি, পিঠা আর অন্যান্য খাবার বিলি করা হয় আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়ার লোকদের মধ্যে।
উৎসবকে মাথায় রেখে টানা এক সপ্তাহ পুরান ঢাকার বায়ান্নো রাস্তা তেপান্নো গলির অধিকাংশ গলিতে আর খোলা ছাদে হয়েছে সুতা মাঞ্জা দেওয়ার ধুম। রোদে সুতা শুকানোর কাজও চলছে পুরোদমে।
পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া, মুরগীটোলা, ধূপখোলা, দয়াগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, সূত্রাপুর, কাগজিটোলা, বাংলাবাজার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, কলতাবাজার, ধোলাই খাল, শাঁখারি বাজার, রায়সাহেব বাজার, তাঁতী বাজার, সদরঘাট এবং লালবাগ এলাকার মানুষ এ উৎসবে দিনব্যাপী ঘুড়ি উড়ান। আয়োজন করেন নানা খাবারের। এছাড়া সন্ধ্যায় আগুন নিয়ে খেলা, আতশবাজী ফোটানো এ উৎসবের অন্যতম অঙ্গ।
কাল সকাল থেকেই ছাদে ছাদে শুরু হবে ঘুড়ি ওড়ানোর উন্মাদনা। ছোট বড় সবার অংশগ্রহণে মুখরিত হবে প্রতিটি ছাদ।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে উৎসবের জৌলুস। আর আকাশে বাড়বে ঘুড়ির সংখ্যা। সকালের তুলনায় বিকালে এ উন্মাদনা পরিপূর্ণতা লাভ করে।
ছাদের উপর চলবে গানবাজনা আর খাওয়া-দাওয়া। সে সঙ্গে আনন্দের উত্তাপকে আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দেয় ঘুড়ির কাটাকাটি খেলা। এছাড়া ঘরে ঘরে তৈরি হবে মুড়ির মোয়া, বাখরখানি আর পিঠা বানানোর ধুম। বর্তমানে এ উৎসবে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া।