কাঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সড়কটি বেহাল-ডিসির নির্দেশনা অগ্রাহ্য
কাঠালিয়া প্রতিনিধি মো.মোছাদ্দেক বিল্লাহ্ : ব্রীজ ধ্বসে ও রাস্তা দেবে যোগাযোগে ব্যবহৃত দু‘টি রাস্তাই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত একমাস ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের নির্দেশ উপেক্ষা করে স্থানীয় সরকার বিভাগের স্বেচ্ছাচারিতা ও উদাসীনতার চরম মাসুল দিতে হচ্ছে উপজেলার দু‘লক্ষাধিক মানুষককে।
দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বয়সী নারী-শিশু ও বয়স্ক মূর্মূর্ষ রোগী ও দূর্ঘটনায় আহতরা হাসপাতালে আসতে না পারায় সীমাহীন ভোগান্তি ও আর্থিক খেসারত দিতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের। বাধ্য হয়ে আশংকাজনক রোগীদের বিভিন্ন স্থান থেকে বেশি ভাড়ায় প্রাইভেট বা মাইক্রোবাসে করে ঝালকাঠি সদর ও বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলে যেতে হচ্ছে।
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, আর কত দিন এভাবে ভোগ করতে হবে। বর্তমান কোরবাণীর ঈদ মহূর্তে এলাকায় লোক সমাগম বেড়েছে এবং ঘটনা-দূর্ঘটনা ও রোগ-বালাই বৃদ্ধি পেলেও এ হাসপাতালে যেতে না পারায় সেবা গ্রহণ নিয়ে উদ্বিগ্ন সবাই।
এদিকে জনগুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রতিষ্ঠান উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এম্বুলেন্স ড্রাাইবার অলস সময় পেয়ে খেয়ালখুশি মত অঘোষিত ছুটি ভোগ করছেন।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সমস্যা সমাধানে ভূমিকা না রেখে বরং রোগী শূন্য হাসাপতালে নামে বে-নামে রোগী দেখিয়ে ওষুধপথ্য ও প্রতিদিন খবার বিল ভাগভাটয়ারায় অনেকটা ব্যস্ত থাকছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অবশ্য এ অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন হাসপতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরত্বে ও বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার সীমান্তের আমুয়া হলতা নদীর তীরে হাসপাতালটি অবস্থিত হওয়ায় শুরু থেকে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মাত্র একটি ওয়ার্ড ব্যতীত ৫৩টি ওয়ার্ডবাসী অনেকটা চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হয়ে আসছিল।
বর্তমানে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ‘ রোগীদের মরার উপর খড়া’ পরিনত হয়েছে। সংগত কারণেই আমুয়ায় স্থাপিত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি রোগীদের এখন উপকারে আসছে না।গত ১৭ আগস্ট সকালে কার্গোর ধাক্কায় হাসপাতল সংযোগ সড়কের হলতানদীর মোহনা খালের ব্রীজটি কার্গোর ধাক্কায় বিধ্বস্ত হয়ে নদীতে পড়ে এ সড়কের যোগাযোগ বন্ধ হয়। পরে বিখল্প সড়ক হিসেবে কাঠালিয়ার বটতলা-হেতালবুনিয়া-আমুয়া সংযোগ সড়কটি দিয়ে এম্বুলেন্সসহ ছোট যানচলাচল করত।
প্রবল বর্ষণ ও পানি বৃদ্ধির প্রভাবে এ সড়কের উকিল বাড়ি ও পূর্ব আমুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (ওয়াহেদ মাষ্টারের স্কুলের) সামনাসহ একাধিক স্থানে রাস্তা দেবে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় গত ২৩ আগস্ট সকাল থেকে এ রাস্তাটিও বন্ধ হয়ে যায়। এতে হাপতালের সাথে সড়ক যোগাযোগের দু‘টো রাস্তাই ১৭ আগস্ট থেকে(একমাস) বন্ধ রয়েছে।
ব্রীজ ক্ষতিগ্রস্ত শোনার পরপরই ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন এবং স্থানীয় আমুয়া ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে ব্রীজ স্থানে খেয়া পরাপারের ব্যবস্থার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২৩ আগষ্ট ‘বিকল্প সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যোগাযোগ বন্ধ’ এ সংবাদ কাঠালিয়া বার্তাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দৃষ্টি গোচর হওয়ায় ঝালকাঠি এলইজিইডি‘র নির্বাহী প্রকৌশালী মো. সেলিম সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করে রোগীদের দূর্ভোগ লাঘবে যান চলাচল উপযোগী করার জোর তাগিদ দেন ডিসি।
রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে মোবাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম সরকার জানান, জরুরী ভিত্তিতে সমস্যা সমাধান হচ্ছে। কিন্তু গত একমাস অতিবাহিত হলেও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তায় আদৌ মেরামত করা হয়নি বা করার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।