ওয়ালশ যুগে টাইগাররা-এবার জমবে নয়া এ্যাকশান-
এস রহমান : ক্রিকেটার হিসেবে তিনি সব সময়ের সেরাদের একজন ছিলেন।এসেই ওয়ালশ এখন টাইগারদের বোলিং কোচ। কোচিংয়ে প্রায় নবীন হলেও দক্ষতায় ভারী এবং সমৃদ্ধ তার বোলিং ভান্ডার।২০১৯ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের বোলিং কোচের দায়িত্ব নিচ্ছেন ওয়ালশ।
বিবৃতিতেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বললেন, মুখিয়ে আছেন নতুন দায়িত্ব নিতে। বিসিবিতে স্পেশালিস্ট বোলিং কোচ হিসেবে যোগ দিয়ে আমি রোমাঞ্চিত। ছেলেদের সঙ্গে কাজ শুরুর জন্য মুখিয়ে আছি আমি। দূর থেকে কয়ক বছর ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনুসরণ করে বুঝেছি, দারুণ প্রতিভাবান সব ক্রিকেটার আছে ওখানে।
ক্যারিবিয়ানে নির্বাচক হিসেবে থাকলেও বাংলাদেশের প্রস্তাব উপেক্ষা করা কঠিন ছিল, বললেন ওয়ালশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডে নির্বাচক হিসেবে কাজটা আমি দারুণ উপভোগ করেছি। সুযোগটা দেওয়ার জন্য ওদেরকে ধন্যবাদ জানাই। অবশ্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজই আমার ঘর তবে প্রতিভাবান একটি দলের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোচিংয়ে নতুন মাত্রায় যাওয়ার সুযোগ এটি। এই সুযোগ আমি হাতছাড়া করতে চাইনি।
প্রধান কোচের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশ দলকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চান ওয়ালশ।প্রধান কোচ হিসেবে চন্দিকা হাথুরুসিংহে অসাধারণ কাজ করেছে এখন পর্যন্ত। আশা করি, ওর স্কিলের সঙ্গে আমি যোগ্য সঙ্গত ধরতে পারব এবং উন্নতির ধারা ধরে রাখতে পারব।বোলিং কোচ হিসেবে কেমন হবেন কোর্টনি ওয়ালশ? কতটা শিখতে পারবে বাংলাদেশের পেসাররা? কতটা উপকৃত হবে বাংলাদেশের ক্রিকেট?
এ প্রসঙ্গে মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, ওয়ালশের ব্যাপারটাই আমার কাছে অন্যরকম; বলে বোঝানোর মত নয়। আমার প্রচণ্ড আবেগ জড়িয়ে এখানে। ছোটবেলা থেকেই ওকে আলাদা চোখে দেখে আসছি। আমাদের সময়ে আমরা ওয়াসিম-ওয়াকারদেরও দেখেছি। কিন্তু ওয়ালশকে আমার সবসময় আলাদা মনে হতো। অ্যাকশনটা ছিল দারুণ, মসৃণ। আমার মনে হতো, ও বল ডেলিভারির সময় আম্পায়ারও বুঝতে পারত না যে কেউ দৌড়ে এসে বল করত।
সে যে মানের বোলার ছিল, যত কিছু পারত, তার কিছুটা শিখতে পারলেও আমাদের জন্য অনেক কিছু হবে। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে ২০ উইকেট নিতে হলে পেস বোলিংয়ের বড় ভুমিকা থাকতেই হবে। এই ক্ষেত্রে ওর অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগবে। ছেলেরা শিখতে পারবে।
টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের তো ডেল স্টেইন নেই, বিধ্বংসী কোনো পেসার নেই। আমাদের দলের জন্য প্রয়োজন এমন একজন পেসার যে ধারাবাহিকভাবে ভালো করে যেতে পারে। এক দিন হয়ত সেই ধারাবাহিকতায় ৩০০ টেস্ট উইকেট নিয়ে নেবে। সেভাবে কাউকে তৈরি করে দেওয়ায় সাহায্য করতে পারে ওয়ালশ।আমাদের কন্ডিশন একটা বড় সমস্যা। ফাস্ট বোলারদের উপযোগী নয়। কিন্তু নিশ্চয়ই এই কন্ডিশনেও কিছু করার আছে। সেই পথটা বা নতুন কিছু বাতলে দিতে পারেন ওয়ালশ।
কোচিং তো কেউ না কেউ কখনো প্রথমবার শুরু করে। ভালো কোচ হওয়ার জন্য ভালো কোচিং ব্যাকগ্রাউন্ড সবসময় জরুরি নয়। ওয়ালশ যে ধরণের ক্রিকেটার ছিল, আমাদের মাঝে ওর উপস্থিতিই আলাদা ভূমিকা রাখতে পারে।ওকে পছন্দ করার এটা একটা কারণ যে সে ১৩২টা টেস্ট খেলেছে।
ফাস্ট বোলার হয়েও ১৭ বছর সার্ভিস দিয়েছে দলকে। নিজেকে কিভাবে ফিট রাখা যায়, এটাও শেখার ব্যাপার।ব্যক্তিগতভাবে ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে আমি চাইব, যে কদিন আছে আমার ক্যারিয়ারের, নতুন কিছু শিখতে চাইব। যে কদিন খেলি, ওর কাছ থেকে শিখে কাজে লাগাতে চাইব।
তাসকিন আহমেদ বলেন, ওয়ালশ-অ্যামব্রোসের কথা ছোটবেলা থেকেই অনেক শুনেছি। খেলা শুরুর পর তো আরও ভালোভাবে জেনেছি। এতদিন শুধু নাম শুনেছি, টিভিতে বা ইউটিউবে দেখেছি। শেষবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে দেখা হয়েছিল। কথা সেভাবে হয়নি। এবার কোচ হিসেবে পাচ্ছি।
অবশ্যই অনেক কিছু শিখতে পারব ওর কাছ থেকে। ওর অভিজ্ঞতা যদি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে এবং আমরা যদি সেটা কাজে লাগাতে পারি, আশা করি ভালো কিছুই হবে।আমার ব্যক্তিগতভাবে প্রথমেই শেখার চেষ্টা থাকবে ওর এক্সট্রা বাউন্স আদায় করার ব্যাপারটি। ন্যাচারাল গতি তো ছিলই, তারপর লেংথ থেকে বাড়তি বাউন্স করাতে পারত। সেটা শেখার চেষ্টা করব। যদিও ক্যারিবিয়ানে ওরা শারীরিক ভাবে আরও শক্তিশালী হয়, তার পরও টেকনিক্যাল ব্যাপার তো আছেই। সেটাই বোঝার চেষ্টা করব।