ওয়ারীতে ছিনতাইকারী তালহার খুনীরা চিহ্নিত
বিশেষ প্রতিনিধি : অবশেষে ওয়ারীতে ছিনতাইকারী খুনীদের চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু তালহা হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুই ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করে পুলিশ। খুব শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে অনলাইন দৈনিক জাতিরকন্ঠকে জানিয়েছেন ওয়ারী জোনের ডিসি ফরিদ উদ্দিন।
ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, তালহা হত্যার সঙ্গে জড়িত দুই ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ দেখে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেই তাদের শনাক্ত করা হয়েছে।ছিনকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে জানিয়ে তিনি বলেন: আমরা তাদেররকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছি। খুব শিগগিরিই আসামিদের ধরা হবে। তাদের পাকড়াও করার জন্য রাজধানী ও আশপাশের জেলায় অভিযান চলছে।
এর আগে গত রোববার ভোরে টিকাটুলি এলাকা দিয়ে রিক্সায় যাচ্ছিলেন একটি বেসরকারি স্কুলের একজন শিক্ষিকা ও তার ভাই। এসময় তিনজন ছিনতাইকারী তাদের পথরোধ করে। পেছনের রিক্সায় ছিলেন তালহা।‘এক পর্যায় সে ছিনতাইকারীদের ধাওয়া করে। এতে একজন ছিনতাইকারী পড়ে যায়। তাকে কিল ঘুষি মেরে মারাত্মক জখমও করে তালহা। একজন পড়ে গেছে দেখে ওই দু’জন আবার ফিরে তালহাকে ছুরি দিয়ে নির্দয়ভাবে কোপাতে থাকে। পরে তিন ছিনতাইকারীই দৌড়ে পালিয়ে যায়।’
ওয়ারীর কে.এম দাস লেনে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সোয়া ৮টার দিকে তালহার মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তালহার মৃত্যু হয়।জানা যায়, ওয়ারী এলাকায় ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। গত ক’দিনে বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে রাতে আর ভোরের দিকে ছিনতাইয়ের এসব ঘটনা ঘটছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বাইরে থেকে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা এই এলাকায় এসে ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। আর এই চক্রের সদস্যরা স্থানীয় বখাটে যুবকদের সহায়তায় নিচ্ছে। ভোরবেলা ও গভীর রাতে সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনালে যাওয়া আসার সময় যাত্রীদের টার্গেট করে এরা।সকালে ঢাকার ওয়ারি থানাধীন কেএম দাস লেনের ১২/৪ নম্বর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ওই বাড়ির তৃতীয় তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন আবু তালহা। নিহত তালহা ঢাকা মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন মহির ভাগ্নে। তালহার ফুফা আবুল হাসনাত শাহ-জালাল বলেন, তালহার উপর যখন ছিনতাইকারীরা হামলা করে তখন কেউ এগিয়ে আসেনি।
প্রত্যেক ভবনের দারোয়ান ছিল, অনেকেই জানালার পাশ থেকে ঘটনা দেখেছেন। কিন্তু কেউ বের হয়ে তালহাকে রক্ষা করেনি। একমাত্র ছেলে হারিয়ে অনেকটাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তালহার বাবা-মা। তালহার প্রসঙ্গ তুলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা নুর উদ্দিন খন্দকার। তিনি বলেন, বছর খানেক আগে তালহা আমার সঙ্গে রিকশা করে যাচ্ছিল। রাস্তায় তরুণ-তরুণীর মধ্যে ঝগড়া দেখে নেমে প্রতিবাদ করে। এই ঘটনার জেরে পড়ে বেশ কয়েকজন তরুণ মিলে আমার ছেলের উপর হামলাও করেছিল।