ওমানে ধরা এমপি সনি-১২ ঘণ্টা পর মুক্ত-কর্মীরা এখনও আটক
বিশেষ প্রতিনিধি/ওমান প্রতিনিধি : ব্যক্তিগত সফরে ওমানে গিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি দেশেটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর মুচলেকায় ছাড়া পেয়েছেন। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এ রকম কোনো খবর তাঁর জানা নেই। মঙ্গলবার রাতে ওমানের হাফফা হাউস মাস্কাট হোটেলে এই ঘটনা ঘটে। একটি সূত্র জানায়, মাস্কাট হোটেলে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীর সঙ্গে বৈঠক করার সময় দেশেটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে আটক করে। কারণ ওই বৈঠকের ব্যাপারে কোনো অনুমতি ছিল না। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর মুচলেকায় ছাড়া পান তিনি।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক কূটনীতিক দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনির সফরটি ব্যক্তিগত। কিন্তু শ’খানেক নেতাকর্মী নিয়ে তিনি বৈঠকে বসেছিলেন। ওমানে অনুমতি ছাড়া এমন কর্মসূচি নিষেধ। তাই মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ তাঁকে আটক করে। পর দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুচলেকায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যদের এখনও ছাড়া হয়নি।বুধবার এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ রকম কোনো খবর আমরা জানি না। সরকারিভাবে আমরা কাউকে সেখানে পাঠাইনি এই মুহূর্তে।’
জানা গেছে, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য। তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম আলহাজ রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে।ওমানে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ-সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত লোকসমাগম হওয়ায় দেশটির গোয়েন্দা পুলিশ হানা দিয়েছে। এতে অনুষ্ঠানটি ভণ্ডুল হয়ে যায়। পরে আয়োজকরা দুঃখপ্রকাশ করলে গোয়েন্দারা চলে যান।
মঙ্গলবার রাতে ওমানের রাজধানী মাসকটের একটি হোটেলে ঘটে এ ঘটনা। বুধবার বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে, এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি ওমানে আটক হওয়ার পর মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার ঢাকায় সাংবাদিকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছু জানেন না বলে উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে ওমানে টেলিফোনে এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বুধবার বলেন, এটা ছিল একটা সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। আমাকে যে হলে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে তার ধারণ ক্ষমতা ছিল ১৫০ জন। কিন্তু লোকসমাগম হয়েছে ৩০০। অনেক মানুষ দেখে গোয়েন্দারা আসেন। এত লোক নিয়ে কেন অনুষ্ঠান করছে তা আয়োজকদের কাছে জানতে চায়।তিনি আরও বলেন, তখন ছিল অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়। আমরা তখনই অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেই। গোয়েন্দাদের জানানো হয়, আমন্ত্রণ ছাড়াই লোকজন অনুষ্ঠানে এসে গেছে। আয়োজকরা দুঃখ প্রকাশ করলে গোয়েন্দারা চলে যান।
সনি জানান, মেয়েকে নিয়ে ছুটি কাটানোর জন্য সোমবার তিনি মাসকট পৌঁছান। সেখানে তিনি আরও অনেক অনুষ্ঠান করেছেন। তবে সেদিন অনুষ্ঠানে বেশি লোক হওয়ায় গোয়েন্দারা হানা দেন।গোয়েন্দা পুলিশ তাকে আটক করেছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে পুলিশের কোনো কথাই হয়নি। তারা অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমাকে আটকের প্রশ্নই আসে না।’