এসএসসি-ফেল বেড়েছে পাশও কমেছে
বিশেষ প্রতিনিধি : চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এবার ফেল বেড়েছে পাশের হারও কমেছে। তবে বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। ওদিকে ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী এবার পাস করতে পারেনি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১৮। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রেও গতবারের চেয়ে এবারে ফল খারাপ হয়েছে। এ বছর গড় পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আগের বছর এ হার ছিল ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার কমেছে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ।
পাসের হার কমলেও বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থী। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০। অর্থাৎ এবার ৮৬ হাজার ২৬২ জন বেড়েছে।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন।মন্ত্রী জানান, সাধারণ ৯ বোর্ডে পাসের হার ৮৮.১০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৬৩ জন। দাখিলে পাসের হার ৮২.২২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ হাজার ৪৫৭ জন। কারিগরিতে পাসের হার ৮৯.৫৫ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ৬৫৫ জন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতি ও বন্যার কারণে দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর অনুষ্ঠিত হয় এ পরীক্ষা।
এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২০ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল প্রায় ১৬ লাখ। মোট তিন হাজার ৭৯০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এসএসসিতে যশোর শিক্ষা বোর্ডের এবার পাসের হার সবচেয়ে বেশি। এ বোর্ডে পাসের হার ৯৫.০৩ শতাংশ। আর পাসের হার সবচেয়ে কম সিলেটে, এ বোর্ডে পাসের হার ৭৮.৮২ শতাংশ। বাকি শিক্ষাবোর্ডগুলোর মধ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৯০ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৮৬.০৭ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৫.৮৮ শতাংশ, কুমিল্লায় ৯১.২৮ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮৭.৫৩ শতাংশ, বরিশালে ৮৯.৬১ শতাংশ, দিনাজপুরে ৮১.১৪ শতাংশ।
এছাড়া দেশের বাইরের ৮টি কেন্দ্র থেকে মোট ৩৬৩ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৩৪৮ জন। সে হিসাবে কেন্দ্রগুলোতে পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৯৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ। গতবার এই পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
এ বছর মোট ২৯ হাজার ৬৩৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে ২ হাজার ৯৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব পরীক্ষার্থী পাস করেছে। গত বছর ৫ হাজার ৪৯৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। অর্থাৎ এ বছর শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে ২ হাজার ৫১৯টি।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। জানা গেছে, রাজশাহীর দুটি, যশোরের একটি, দিনাজপুরের পাঁচটি, ময়মনসিংহের একটি এবং মাদ্রাসা বোর্ডের ৪১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গত বছর পাসের হার শূন্য ছিল ১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সে হিসাবে এ বছর পাসহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে (৩২টি)৷ সোমবার (২৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের অনুলিপি হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পরে দুপুর ১টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত ফল প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।