কে সামলাবে এমপিদের বেপরোয়া ছেলেদের?
বিশেষ প্রতিনিধি : রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারে মঙ্গলবার রাতে বেপরোয়া গাড়ির গতি কেড়ে নিল এক পথচারীর প্রাণ। ফ্লাইওভার পার হতে যাওয়া সেলিম ব্যাপারী (৪৫) নামে ওই পথচারীকে ধাক্কা দেয় গাড়িটি। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলে গাড়িটির নম্বর প্লেট পড়ে থাকে। ‘অডি’ ব্র্যান্ডের গাড়িটি নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর স্ত্রী কামরুন্নাহার শিউলির নামে রেজিস্ট্রেশন করা বলে জানা গেছে। কামরুন্নাহার শিউলি কবিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাড়িটি ওই পথচারীকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যেতে থাকে। এ সময় গাড়িকে ধাওয়া করেন এক মোটরসাইকেল আরোহী। পরে গাড়িটি মানিক মিয়া এভিনিউয়েতে এমপি হোস্টেলে প্রবেশ করে। ওই মোটরসাইকেল আরোহী সেখানে গেলে গাড়ির ভেতরে থাকা সাবাব চৌধুরী নিজেকে সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে পরিচয় দেন। কাফরুল থানা পুলিশ জানায়, রাতে একটি প্রাইভেটকার সেলিমকে ফ্লাইওভারের ওপর চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর পুলিশ লাশ উদ্ধার করে কাফরুল থানায় নিয়ে যায়।
কাফরুল থানার ওসি শিকদার মোহাম্মদ শামীম হোসেন বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা গাড়ির নম্বর (ঢাকা মেট্রো ১৩-৭৬৫৫) পেয়েছি। বিআরটিএতে এই নম্বর পাঠিয়ে গাড়ির মালিকের বিস্তারিত তথ্য পাব, এরপর আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব।ওসি জানান, নিহত সেলিম ভূঁইয়ার লাশ উদ্ধারের পর প্রথমে কাফরুল থানায় আনা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেলেন মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত সেলিমের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। তিনি মহাখালী ডিওএইচএসে এক ব্যক্তির গাড়ি চালাতেন। তার মেয়ের জামাতা আরিফ ভুঁইয়া বলেন, ‘আমার শ্বশুর ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাওয়ার পর গাড়িটি কিছু দূর এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু গাড়িটি আবার পিছিয়ে এসে তার মাথার ওপর চাকা উঠিয়ে দেয়। তখন মাথা ফেটে মগজ বের হয়ে মারা যান তিনি।’
আরিফ জানান, ঘটনার পর ফ্লাইওভার থেকে তার শ্বশুরের লাশ ও সেখান পড়ে থাকা গাড়ির নম্বর প্লেট উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে থানায় গিয়ে গাড়ির নম্বর উল্লেখ করে তিনি মামলা করেন। তিনি বলেন, গাড়িটি সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর বলে জানতে পেরেছি। আমার শ্বশুরকে চাপা দেয়ার সময় গাড়িটি তার ছেলে সাবাব চৌধুরী চালাচ্ছিলেন।এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি।