এবার বিচারপতি পছন্দ হয়নি বিএনপি’র
কোর্ট রিপোর্টার : এবার বিচারপতি পছন্দ হয়নি বিএনপি’র। ফলে তারা শুনানি করেননি। নির্বাচনে তিনটি আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পৃথক রিট শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন একক বেঞ্চের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেছেন তাঁর আইনজীবী। আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য সোমবার পর্যন্ত মুলতবি রেখেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার জে বি এম হাসানের বেঞ্চে শুনানির জন্য ১, ২ ও ৩ নম্বরে রাখা হয় রিট তিনটি। গতকাল বুধবার প্রধান বিচারপতি এই বেঞ্চ ঠিক করে দেন। আজ দুপুর ২টা ১০ মিনিটে রিটের শুনানি শুরু করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল।শুনানি শেষে আইনজীবী বলেন, ‘আমি আদালতকে বলেছি, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এই তিনটি রিট হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে এর আগে শুনানি হয়েছে। সেখানে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি খালেদা জিয়ার ভোটের পক্ষে মত দিয়েছেন। কোনো রিট সিনিয়র বেঞ্চে শুনানির পর জুনিয়র বেঞ্চে আবার শুনানি করা ঠিক নয়।’
‘আজকে আমাদের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা ছিলেন না। ফলে এ মামলার শুনানির জন্য আমরা প্রস্তুত না। আর আমরা এখানে শুনানি করতেও রাজি না। তাই অনাস্থা প্রদান করছি। তখন আদালত এ বিষয়ে লিখিত দিতে বলেন। আমি তখন বলি, আজ তো লিখিত নিয়ে আসি নাই। সোমবার পর্যন্ত সময় দেন। আদালত তখন এ বিষয়ে শুনানির জন্য সোমবার পর্যন্ত মুলতবি রাখেন,’ যোগ করেন ব্যারিস্টার বাদল।
এর আগে গত মঙ্গলবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র ফিরে পেতে কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা রিটের বিভক্ত আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও মো. ইকবাল কবিরের দ্বৈত বেঞ্চ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভোটের ব্যাপারে এ বিভক্ত আদেশ আসে। পরে হাইকোর্টের দেওয়া দ্বৈত আদেশ বিস্তারিত লেখার জন্য নথি ফেরত পাঠানো হয়। দুপুরে বিস্তারিত লিখে আদেশ জমা দেওয়ার পর প্রধান বিচারপতি বিকেলে নতুন করে এ বিষয়ে শুনানির জন্য বেঞ্চ গঠন করে দেন।
এর মধ্যে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন যে রায় দিয়েছিল, তা স্থগিত ঘোষণা করেন এবং কেন এই আদেশ অবৈধ হবেনা তার জন্য রুল জারি করেন। এই বিচারপতির আদেশের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. ইকবাল কবির। তিনি খালেদা জিয়ার আদেশ খারিজ করে দেওয়ার মত দেন।
খালেদা জিয়ার পক্ষে ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তারা তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন। এরপর গত ৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল আবেদন করেন। গত শনিবার শুনানির সময় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। তাঁরা তিনটি আসনেই খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করেন।
এর পরই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভোটের লড়াইয়ে ফিরতে হাইকোর্টে আসেন। গত রোববার বিকেলে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। দ্বৈত আদেশের এ রায়ের কপি মোট দুই পৃষ্ঠা।গত ৯ ডিসেম্বর ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে সারা দেশে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হয়েছে। আর ভোট গ্রহণ হবে ৩০ ডিসেম্বর।