এবার কি নাসির সাদলিদের বিশ্বকাপ!
স্পোর্টস রিপোর্টার : এবার কি নাসির সাদলিদের বিশ্বকাপ! শেষমেষ বেলজিয়াম কি এবার বদলে দেবে ফুটবল বিশ্ব। এসব নানা প্রশ্ন! তা নিয়ে গত ২৪ ঘন্টা ধরে চলছে আলোচনা।বেলজিয়ামের নাসির শাদলি এ্যাকশানে রক্তাত্ত জাপানে সেটা বুঝেছে। এবার বিশ্ব বুঝছে বেলজিয়ামের নাসির সাদলিদের।
গতকাল গ্যালারিতে উত্তেজনায় কম্পমান ছিল দর্শক’রা। বেলজিয়াম জাপানের রক্ষণে এই ঝাঁপিয়ে পড়ে তো জাপান তাদের রক্ষণে ঢুকে জবাব দিয়ে আসছে। গোটা পঁয়ত্রিশেক শট নিয়েছে দুই দল। এই বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে যা রেকর্ড। পয়সা উশুল ম্যাচ হতে এতটুকুই তো যথেষ্ট! ওহ্, ভুল হলো।
শেষ অর্ধে পাঁচটা গোলও হয়েছে। তাহলে কি এই বিশ্বকাপে এটা সেরা ম্যাচ?নিখুঁত জবাব দেওয়া কঠিন। কিন্তু এতটুকু বলাই যায়, এ রকম গতিময় ম্যাচ এই বিশ্বকাপে দেখা গেছে কি না সন্দেহ! রোস্তভে লাল-নীল রঙের মিশেলে উথালপাতাল ঢেউয়ের সমুদ্রটি শেষ পর্যন্ত রূপ নিয়েছে আক্রমণ প্রতি–আক্রমণের সুনামিতে।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে এবারই প্রথম নকআউট পর্বের দুটি ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ৫টি করে গোল দেখা গেল। এই ম্যাচে বেলজিয়াম শুধু জিতেছে, আসলে দুই দলই লড়েছে সমানে সমান। শুরুর মিনিট দশেকে জাপান বার কয়েক হানা দিয়েছে বেলজিয়ামের রক্ষণে।
বিরতির পর ফেরারি আর ল্যাম্বরঘিনির মতো ছুটেছেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। ফলাফল, ৪৮ থেকে ৭৪—এই ২৬ মিনিটের মধ্যে চার গোল। এই সময়ের মধ্যে ৪৮ থেকে ৫২—এই ৫ মিনিটের মধ্যে জাপান করেছে জোড়া গোল।
বেলজিয়াম তার জবাবে এক মিনিট সময় বেশি নিয়েছে। ৬৯ থেকে ৭৪—এই ৬ মিনিটের মধ্যে প্রতিপক্ষের পাঠানো জোড়া ফলার কুশলজ্ঞাপনের জবাব দিয়েছেন লুকাকুরা। আর একেবারে অন্তিম মুহূর্তে যখন মাত্র কয়েক সেকেন্ড বাকি, তখন বেলজিয়ামের নাসির শাদলি জাপানের বুকে চালিয়েছেন ছুরি! সেই আঘাতে রক্তাক্ত জাপান বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলেও লিখে গেছে নতুন ইতিহাস।
বিশ্বকাপে তারা এর আগে দুবার শেষ ষোলোর নকআউট পর্বে উঠেও গোল পায়নি। এবার সেই খরা ঘোচানোর মধ্য দিয়ে জাপান প্রমাণ করেছে, এই ম্যাচে তারা নিজেদের কতটুকু নিংড়ে দিয়েছিল। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে ন্যূনতম দুই গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে জয়ের সর্বশেষ নজির ছিল ১৯৭০ টুর্নামেন্টে পশ্চিম জার্মানি-ইংল্যান্ড ম্যাচে। তারপর বহু দলই একইভাবে পিছিয়ে পড়ে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
কিন্তু বেলজিয়ামের এই দলটার চোখে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন। লুকাকুরা সেই স্বপ্নের পিছু ছুটছেন বলেই তো এই প্রায় ‘অসম্ভব’ কাজটি সম্ভব হলো—হ্যাঁ, ৪৮ বছর আগের সেই ম্যাচের পর বেলজিয়াম দুই গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও জয়ের দ্বিতীয় কীর্তি গড়ল।