এক সন্তানের জননীর প্রেম-প্রীতি অতপর বিয়ের দাবীতে অনশন
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ৮ দিন ধরে অনশন করছেন এক কন্যা সন্তানের জননী। ওই প্রেমিকের নাম সাদ্দাম হোসেন। অনশন করা প্রেমিকা হলেন আঁখি খাতুন (২১)। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের চৌদুয়ার গ্রামের এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।প্রতিদিন প্রেমিক সাদ্দামের বাড়িতে অনশনরত ওই প্রেমিকাকে দেখতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানায়, ৬ বছর আগে চৌদুয়ার গ্রামের আতাহার আলীর ছেলে কৃষক আল-আমিনের সঙ্গে শিয়ালকোল ইউনিয়নের বড় হামকুড়িয়া গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে আঁখি খাতুনের বিয়ে হয়।
বিয়ের ১ বছর পর তাদের সংসারে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু মেয়ে সন্তান হওয়ায় আঁখিকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতেন আল-আমিন। এক পর্যায়ে আঁখি খাতুন শ্বশুর বাড়ির পাশে রফিকুল ইসলাম ওরফে ইসমাইল সরকারের ছেলে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
এরপর দীর্ঘ ৪ বছর ধরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে আঁখির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন সাদ্দাম। বিষয়টি জানাজানি হলে সম্প্রতি স্বামী আল-আমিন স্ত্রী আঁখি খাতুনকে তালাক দেয়। পরে আঁখির পরিবারের পক্ষ থেকে প্রেমিক সাদ্দাম হোসেনের পরিবারকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তার পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে। এ অবস্থায় প্রেমিক সাদ্দাম নানা টালবাহানার পাশাপাশি অন্যত্র বিয়ে করার চেষ্টা করে।
এ খবর জানতে পেরে প্রেমিকা আঁখি বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরিবারের লোকজন তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। গত ১৩ জুন মঙ্গলবার সকাল ১০টায় আঁখি খাতুন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে ওঠে।
এ সময় প্রেমিক সাদ্দাম কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে আঁখি খাতুন বিয়ের দাবিতে ওই বাড়িতে অবস্থান নেয়।সাদ্দামের পরিবারের লোকজন আঁখি খাতুনকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এ অবস্থায় আঁখি সাদ্দামের সঙ্গে বিয়ে না হলে আত্মহত্যা করবে বলে সাদ্দামের পরিবারকে হুমকি দেয়।
এ ব্যাপারে প্রেমিকা আঁখি বলেন, সাদ্দাম আমাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। তিনি বলেন, সম্প্রতি বিয়ের কথা বললে সে কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি স্বামী-সন্তান ছেড়ে সাদ্দামকে ভালোবেসেছি। এখন সে আমার সর্বনাশ করে অন্যত্র বিয়ে করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই আমি নিজেই তার বাড়িতে চলে এসেছি।
আঁখি আরও বলেন, বিয়ে না করা পর্যন্ত এ বাড়ি থেকে কোনোভাবেই বাড়ি ফিরে যাব না। আর যদি বাড়ি ফিরে যেতেই হয় সেটি আমার লাশ যাবে বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।স্থানীয় ইউপি সদস্য হাওয়া বেগম বলেন, চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। কামারখন্দ থানার ওসি বাসুদেব সিনহা বলেন, অনশনের ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখনও কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।