• মঙ্গলবার , ৭ মে ২০২৪

একটা চান্স পেলে ফের নাফিস ‌‌‌‌’বাপের বেটা টাইগার’!


প্রকাশিত: ১:১৫ পিএম, ২৩ আগস্ট ১৫ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১০৭ বার

Shahriar-Nafees-www.jatirkhantha.com.bdস্পোর্টস রিপোর্টার.ঢাকা:  একটা চান্স পেলে  ফের নাফিস ‌‌‌‌’বাপের বেটা টাইগার’ হয়ে উঠতে পারেন বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।নাফিসের একটা চান্স বদলে দিতে পারে অস্ট্রেরিয়ার বিপক্ষে টাইগারদের ম্যাচ।অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফতুল্লায় খেলা শাহরিয়ার নাফীসের সেই ১৩৮ রানের ইনিংস কি কেউ ভুলে যেতে পেরেছে?
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আরও একটি টেস্ট সিরিজ আসন্ন বলেই নাফীসের সেই বীরত্বগাথা যেন বেশি করে মনে পড়ছে সবার। লি-গিলেস্পি কিংবা শেন ওয়ার্নদের বিপক্ষে তাঁর সেই ইনিংস দৃষ্টি কেড়েছিল সমগ্র ক্রিকেট দুনিয়ারই। ব্যাট হাতে তাঁর ধারাবাহিকতা আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর টেম্পারামেন্ট দেখে অনেকেই তো তাঁর মধ্যে দেখতে পাচ্ছিলেন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অধিনায়ককে। বোদ্ধারা আশাবাদী ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের নতুন দিনের পথচলাটা হবে এই নাফীসকে কেন্দ্র করেই। আজ প্রায় ১০ বছর পর বাংলাদেশের ক্রিকেটের সত্যিকারের নতুন দিন এসে গেছে। কিন্তু সেখানে নেই কেবল সেই নাফীস। এ দেশের ক্রিকেট অনেক কিছুই পেয়েছে। কেবল হারিয়েছে তাঁকেই।
Shahriar-Nafees-2আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর পথচলা নিয়েও তিনি খুব একটা অতৃপ্ত নন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে যে চাওয়া-পাওয়ার মিশেল ঘটেনি, সেটা নিয়ে কিছুটা হলেও হতাশ তিনি। তবে তিনি আশাবাদী। নিজেকে প্রমাণ করেই জাতীয় দলে ফিরতে চান তিনি। প্রথম আলোর সঙ্গে এক একান্ত আলাপচারিতায় তিনি জানিয়েছেন, জাতীয় দলে ফেরার ব্যাপারটি তিনি ছেড়ে দিয়েছেন নিজের ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স আর নির্বাচকমণ্ডলীর ওপর। এ নিয়ে তাঁর মধ্যে মোটেও কোনো তাড়াহুড়ো কাজ করছে না।
চাওয়ার সঙ্গে পাওয়ার মিশেল না হওয়াটাকেও তিনি জীবনের অংশ হিসেবেই মানেন, ‘মানুষের জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই। সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতা আসাটাও অস্বাভাবিক নয়। আমি ব্যাপারটিকে এভাবেই দেখি। জীবনে চাওয়া অনুযায়ী অনেক সময়ই মানুষ অনেক কিছু পায় না। আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারটাকেও আমি ঠিক সেভাবেই দেখি।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটা সময় ছিল জাতীয় দলের ‘অটোমেটিক চয়েজ’। ২০০৫ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত জাতীয় দল থেকে তাঁকে বাদ দেওয়ার চিন্তাও কেউ করেনি। কিন্তু ২০০৮ সালে হঠাৎ বিতর্কিত আইসিএল তাঁর ক্যারিয়ারে ছন্দপতন এনে দেয়। নাফীস অবশ্য আইসিএলকে কোনো কারণ হিসেবে মনে করেন না। এ ব্যাপারে তাঁর যুক্তিও খুব জোরদার, ‘আমি আইসিএলকে কোনো কারণ হিসেবে মনে করি না। ২০০৭ বিশ্বকাপে অনেক প্রতিশ্রুতি নিয়ে খেলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী আমার পারফরম্যান্স ছিল খুব খারাপ। ছন্দপতনটা শুরু হয় ঠিক সেই সময়ই। আইসিএল থেকে ফিরেও কিন্তু আমি ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত নিয়মিত জাতীয় দলে খেলেছি। এই সময় আমার অর্জনগুলোও নেহাত মন্দ নয়। হয়তো অনন্যসাধারণ কোনো পারফরম্যান্স দেখাতে পারিনি। এটা যদি ব্যর্থতা হয়, সেটা আমি মেনে নিচ্ছি। তবে এটা বলতে পারি, আমি চেষ্টা করছি। কঠোর পরিশ্রম করছি। তবে জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে আমার মধ্যে কোনো তাড়াহুড়ো নেই।’
নিজেকে প্রমাণ করেই ফি​রতে চান নাফীস।

নাফীস চেষ্টা করে যাচ্ছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর সর্বশেষ দশটি ইনিংস দেখলেই বোঝা যায় তাঁর চেষ্টার মাত্রাটা। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে এই দশ ইনিংসে আছে ছয়টি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। যার তিনটি ‘নার্ভাস নাইন্টিজ’। আছে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে ১৬১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। এত কিছুর পরেও জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়াটা যে এই মুহূর্তে খুব কঠিন, সেটা মানেন নাফীসও, ‘এখন কম্পিটিশনটা খুব বেশি। জাতীয় দলও ইতিহাসের সেরা সময়টা অতিবাহিত করছে। সবাই যে যার মতো ভালো করছে। আমি জানি এই মুহূর্তে জাতীয় দলে ফেরাটা বেশ কঠিন। বাস্তবতাটা মেনে নিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি। কষ্ট করছি। কষ্টের ফল অনেক সময়ই মধুর হয়। আমি মনে করি আমার ক্ষেত্রেও তেমনটাই হবে।’
নাফীসের মতে, এই মুহূর্তে জাতীয় দল ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পাশাপাশি একটা শক্তিশালী ‘এ’ টিম থাকাটা খুব জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে, ‘“এ” টিম থাকাটা খুব দরকার। আমাদের এখানে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পরপরই জাতীয় দল। মাঝে কিছু নেই। বাংলাদেশে আমার জানা মতে কমপক্ষে ২০ জন টেস্ট ক্রিকেটার আছে যাদের নিয়ে খুব শক্তিশালী একটি ‘এ’ দল হতে পারে। এই ২০ জন টেস্ট ক্রিকেটারের অনেকেই আবার জাতীয় দলে ফিরতে পারে। ‘এ’ দল হলে এই খেলোয়াড়েরা একটা প্ল্যাটফর্ম পায়। এ দলের জন্য বছরে একটা সফরের পরিকল্পনা যদি করা যায়, তাহলে জাতীয় দলের ব্যাকআপ দারুণভাবে তৈরি থাকবে।’