• মঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর ২০২৪

ইসলাম প্রতিষ্ঠায় সশস্ত্র লড়াইয়ের কোন বিধান নেই: হুমায়ূন কবীর


প্রকাশিত: ৮:২৭ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ১৭ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৬ বার

স্টাফ রিপোর্টার  :  ইসলাম প্রতিষ্ঠায় সশস্ত্র লড়াইয়ের কোন বিধান ইসলামে নেই বলে জানিয়েছেন isইসলামী সমাজের আমীর সৈয়দ হুমায়ূন কবীর। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে ইসলাম ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি নিয়ে উগ্রতা ও জঙ্গিবাদসহ নানান বিভ্রান্তি চলছে।

ইসলাম ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি বিষয়ে সঠিক ও যথাযথ জ্ঞাণের অভাবই এ সকল বিভ্রান্তির মূল কারণ। সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত না থাকাকালীন সময়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতা লাভের জন্য সশস্ত্র লড়াই করার কোন বিধান ইসলামে নেই। ইসলামী সমাজের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আমীর হযরত সৈয়দ হুমায়ূন কবীর এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে যে সব দল ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে উগ্রপন্থা ও জঙ্গীবাদে জড়িয়ে ভিভিন্ন রকম মানবতা বিরোধী কাজে লিপ্ত, তারা মহা বিভ্রান্তিতে ডুবে আছে। তাদের এধরনের সকল কর্মকান্ড ইসলাম নয়, বরং সন্ত্রাসবাদ।

ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে উগ্র হওয়া, জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পরা জান্নাতের পথ নয়, বরং জাহান্নামেরই পথ। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে মানুষ মানব রচিত ব্যবস্থার অধীনে থেকে ইসলামের কতিপয় ধর্মীয় হুকুম পালন করে নিজেদেরকে ঈমানদার ভাবে এবং জান্নাতের স্বপ্ন দেখে- এটাও চরম বিভ্রান্তি।

তিনি বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত না থাকাকালীন সময়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় “সশস্ত্র লড়াইকে রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতা লাভের পদ্ধতি” বিশ্বাস করা এবং এ পদ্ধতির প্রতি লোকদেরকে উদ্বুদ্ধ করা, আকৃষ্ট করা এবং কর্মতৎপর হওয়া, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্রসহ বিভিন্ন রকম ক্ষতিকর সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করা, লড়াই করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং বাস্তবে মানুষের জান-মালের উপর আঘাত করা ও মানুষ হত্যা করা, নিজে হত্যা হওয়া এরই নাম জঙ্গীবাদ।

এ ধরনের কর্মকান্ড ইসলামের নীতি ও আদর্শ বিরোধী এবং মানবতা বিরোধী চরম অপরাধ বিধায়; ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে উগ্রতা ও জঙ্গীবাদ- ইসলাম নয়, সন্ত্রাসবাদ। সকল ধর্মের লোকদের জন্য যার যার ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার সুযোগ রেখে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলেই দুনিয়ায় মানুষের জীবনে সুশাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।

ইসলামী সমাজের নেতা মুহাম্মাদ ইয়াছিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী সমাজের আমীর বলেন, ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টির লক্ষ্যেই ১৯৯৭ ইং সালের ১৭ মে মুফ্তী আবদুল জাব্বার (রহঃ) ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। ইসলামী সমাজের নেতা কর্মীরা আল্লাহর নির্দেশিত ও তাঁরই রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রদর্শিত শান্তিপূর্ন পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আমীর বলেন, ইসলামী সমাজের নেতা কর্মীরা ঈমান ও ইসলামের দাওয়াত দিতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশাসন কর্তৃক সন্দেহমূলক গ্রেফতার ও হয়রানীর শিকার হয়েছেন। গত ০৩/০২/২০১৭ ইং শুক্রবার রাত ৮টার পর চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর মৌসুমী আবাসিক এলাকায় ইসলামী সমাজের সদস্য জামাল উদ্দিনের ভাড়া বাসায় ঈমান ও ইসলামের শান্তিপূর্ন আলোচনা বৈঠক চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগর ডিবি পুলিশ ও স্পেশাল টাস্কফোর্স কর্তৃক গ্রেফতার হওয়া ইসলামী সমাজের ২৪ নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ন অসত্য ও মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

ইসলামী সমাজ কালো তালিকাভুক্ত সংগঠন একথা সরকার কোন দিনই ঘোষণা করেনি এবং ইসলামী সমাজ কালো তালিকাভূক্ত হওয়ার মত কোন কাজও করেনি। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই ইসলামী সমাজের নেতা ও কর্মীরা দুর্নীতি, সন্ত্রাস, উগ্রতা ও জঙ্গীবাদসহ সকল অপতৎপরতা নির্মূলের লক্ষ্যেই সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

দুর্নীতি, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসসহ সকল অপতৎপরতার বিরুদ্ধেই ইসলামী সমাজের নেতা কর্মীদের দৃঢ় অবস্থান। সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক তদন্ত করে ইসলামী সমাজের ¯^চ্ছতা তারা পেয়েছেন। এতকিছুর পরেও ইসলামী সমাজের নেতাকর্মীদের উপর মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দেয়া খুবই দুঃখ জনক।