ইউনিপেটুইউ’র বোয়ালরা এখনও অধরা
কোর্ট রিপোর্টার : অর্থপাচার মামলায় ‘মাল্টি লেভেল মার্কেটিং’ কোম্পানি ইউনিপে-টু-ইউ বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ছয়জনকে ১২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ছয় আসামিকে ২ হাজার ৭০২ কোটি ৪১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে-ইউনিপেটুইউ’র রাঘব বোয়ালরা এখনও অধরা।যারা ধরা পড়ে জেলে আছে তারা চুনোপুটি।
ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন বুধবার তিন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি পলাতক তিনজনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন আদালত। রায়ের পর আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়।সাজাপ্রাপ্তরা হলেন— ইউনিপে-টু-ইউ বাংলাদেশের লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুনতাসির হোসেন ইমন, চেয়ারম্যান মো. শহীদুজ্জামান শাহীন, নির্বাহী পরিচালক মাসুদুর রহমান, মহাব্যবস্থাপক এ এম জামসেদ রহমান, উপদেষ্টা মঞ্জুরুল এহসান চৌধুরী ও ইউনিল্যান্ড লিমিটেডের পরিচালক এইচএম আরশাদ উল্লাহ। এদের মধ্যে শহীদুজ্জামান শাহীন, মাসুদুর রহমান ও মঞ্জুরুল এহসান চৌধুরী পলাতক।
রায়ে আদালত বলেছেন, গ্রেফতারের পর আসামিদের সাজা হাজতবাসকালীন সময় থেকে বাদ যাবে। আর জরিমানার অর্থ ১৮০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে। দুদকের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।অবৈধভাবে সাড়ে ১৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আমদানি, রফতানি ও মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কোম্পানি হিসেবে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের নিবন্ধন নিয়ে কাজ শুরু করে ইউনিপে-টু-ইউ। কিন্তু আসামিরা বিনিয়োগের আইনকানুন ভঙ্গ করে ‘ভারচুয়াল গোল্ডে’ কথিত বিনিয়োগের কথা বলে অল্প সময়ের মধ্যে বেশি মুনাফার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। তাদের প্রচার ও অপকৌশলে বিভ্রান্ত হয়ে আর্থিক লাভবান হওয়ার আশায় মানুষ ২০০৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে সিটি ব্যাংক নিউ মার্কেট শাখা, এনসিসি ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখা ও ব্র্যাক ব্যাংক এলিফ্যান্ট রোড শাখায় মোট ২৪৬ কোটি ৩০ লাখ ৪৫৪ টাকা জমা করে।
আসামিদের মধ্যে ইউনিপে-টু-ইউ বাংলাদেশ লিমিডেটের এমডি মুনতাসির হোসেন ও চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান শাহীন ২৫ কোটি ১২ লাখ ৩ হাজার ২০৭ টাকা ‘খরচ দেখিয়ে’ তুলে ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর বা রূপান্তর করেন, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২২ জুন এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৫ সালের ৬ জুলাই অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। রাষ্ট্রপক্ষে ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য শুনে আদালত বুধবার ছয় আসমিকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করেন।