আশ্রয়ণ ঘুষ ফেরত দিলেন ইউএনও
নেপথ্যে কি আওয়ামী লীগ নেতা বাঁচানো না অন্যকিছু!
নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের গুরুদাসপুরে আওয়ামী লীগ নেতাকে বাঁচাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেয়ার নামে নেয়া ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায়। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকালে সাতজন অভিযোগকারীদের তার বাসভবনে ডেকে ওই টাকা ফেরত দেন তিনি।
এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অভিযোগকারী আসমা বেগম ইঞ্জিরা বেগম, রাবিয়া বেগম, রিজিয়া বেগম, হাবিয়া বেগম, সাহারা বেগম ও মমতাজ বেগমকে ইউএনও তার বাসভবনে ডেকে নেন। সেখানে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে অভিযোগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইউএনও।
এদিকে ঘুষের টাকা ফেরত দেয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ইউএনওর বাসভবনের সামনে অবস্থান করেন। সংবাদকর্মীরা এ বিষয়ে জানতে ইউএনও শ্রাবনী রায়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। এমনকি তার মুঠোফোনটি পর্যন্ত ধরেননি।
এদিকে ঘুষের টাকা ফেরত পেয়ে বাড়ি ফেরার পথে গুরুদাসপুর থানা মোড়ে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা হয় ওই অভিযোগকারী নারীদের। তারা বলেন, ইউএনও শ্রাবনী রায় বৃহষ্পতিবার রাতে টাকা ফেরত দেয়ার জন্য মুঠোফোনে শুক্রবার তার সরকারি বাসভবনে আসতে বলেছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এসেছিলেন তারা, সেখানে বিষয়টি গোপন রাখার শর্তে অভিযোগকারী ৭ জনের মধ্যে ৪ জনকে ৫০ হাজার করে এবং একজনকে ৪০ হাজার টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে সাহারা বেগম ও মমতাজ বেগমের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের পর টাকা ফেরত দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও। পরে ফেরত পাওয়া টাকার বান্ডিল সংবাদকর্মীদের দেখান অভিযোগকারী নারীরা।
ভুক্তভোগী নারীরা অভিযোগ করে বলেন, গুরুদাসপুর উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছিলেন।
এ ঘুষের টাকা ফেরত পেতে গত বুধবার ভুক্তভোগী সাহারা খাতুন ও মমতাজ বেগম বাদী হয়ে নাটোর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও জেলা প্রশাসকের নজরে আসে।
এরই প্রেক্ষিতে বৃহষ্পতিবার অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নূর মোহম্মদ মাসুম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগকারীদের শুনানি নেন। এ সময় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন না।
এ শুনানিতে ইউএনও শ্রাবনী রায় ছাড়াও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ভুক্তভোগীদের শুনানি নেয়ার একদিন পরই শুক্রবার ইউএনও শ্রাবনী রায় ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছেন অভিযোগকারী নারীদের। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম কোনও মন্তব্য করতে রাজী হননি।