আ’লীগসহ ১১ দল নিষিদ্ধে ২ রিটে রণেভঙ্গ সারজিসদের
কোর্ট রিপোর্টার : আওয়ামী লীগসহ ১১ দলকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি না দিতে এবং বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে করা দুটি রিট না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রিট আবেদনকারীরা। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ মঙ্গলবার রিট দুটি না চালানোর কথা জানান আবেদনকারীদের আইনজীবী। রিট না চালানোর আরজির পরিপ্রেক্ষিতে তা উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দেন আদালত।
গত রোববার ওই দুই পৃথক রিট করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম, আবুল হাসনাত (হাসনাত আবদুল্লাহ) ও হাসিবুল ইসলাম। রিট দুটি আজ সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় ২০৮ ও ২০৯ নম্বর ক্রমিকে ওঠে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে রিট দুটি না চালানোর কথা জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী ও আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, ‘কোনো মামলা যদি ক্লায়েন্ট (মক্কেল) না চালাতে চান, তখন তিনি তা প্রত্যাহার করার ইনস্ট্রাকশন (নির্দেশনা) দেন। সে অনুসারে আইনজীবী কাজ করে থাকেন। মক্কেল কখনো বলেন না যে, তিনি কি কারণে মামলা চালাবেন না। সুতরাং কি কারণে মামলা চালানো হবে না, তা জানা নেই। তবে সার্বিক গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য ও দেশের সার্বিক মঙ্গলের জন্য তারা (রিট আবেদনকারীরা) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই আমরা বিশ্বাস।’ তিনি বলেন, যখন কোনো মামলা চালাতে না চাওয়া হয়, তখন কার্যতালিকায় আর মামলাটি থাকে না। অর্থাৎ মামলা না চালানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেটি উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
এক প্রশ্নের জবাবে রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী বলেন, এখানে ভুলক্রমে কিছু কিছু দলের নাম চলে এসেছে, যা অনিচ্ছাকৃত। কিছু নাম বাদও পড়েছে। যদি রিট চালানো হতো তখন তা সংশোধনের প্রয়োজন হতো। তখন নামগুলো বাদ যেত। অবশ্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী বলেন, রিট দুটি না চালানোর কথা আদালতকে জানান আবেদনকারীদের আইনজীবী। এর পরিপ্রেক্ষিতে উত্থাপিত হয়নি বলে রিট খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
দুটি রিটের একটিতে আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অনুমতি না দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল। রিট আবেদনে নির্বিচার মানুষ হত্যা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, বেআইনি প্রক্রিয়ায় অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছিল। অপর রিটে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছিল। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত ওই তিনটি নির্বাচনের গেজেট কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছিল।