আলমারির ভেতর থেকে পাকড়াও কেএনএফ ‘প্রধান সমন্বয়ক’ বম
বান্দরবান প্র্রতিনিধি : বান্দরবানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ‘প্রধান সমন্বয়ক’ চেওসিম বমকে (৫৫) আটক করেছে র্যাব-১৫। শনিবার রাতে সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের শ্যারনপাড়ার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।র্যাব জানায়, কেএনএফের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বমকে আটক করা হয়েছে। নিজ ঘরে আলমারির ভেতর লুকিয়ে ছিলেন তিনি। র্যাবের বিশেষ দল সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চেওসিম বমের বাড়ি ঘেরাওয়ের পর ভেতরে প্রবেশ করে র্যাব। কিন্তু কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে ঘরের স্টিলের আলমারির ভেতর থেকে তাকে আটক করা হয়। আলমারিতে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। তার কাছ থেকে দুটি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। চেওসিম বম কেএনএফের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক।
র্যাব জানায়, রোয়াল লিন বম (৫৫) এবং চেওশিম বম (৫৫) বান্দরবানে প্রথম কেএনএফ গঠন করে। তাদের সঙ্গে কেএনএফ প্রধান নাথান বমের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। এর আগে রোববার (৭ এপ্রিল) বান্দরবানের থানচি ও রুমায় কয়েক দফা সন্ত্রাসী হামলার পর সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে যৌথ বাহিনীর কম্বিং অপারেশন শুরুর কথা গণমাধ্যমকে জানান সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কম্বিং অপারেশন শুরু হয়েছে। বিভিন্ন বাহিনী সম্মিলিতভাবে এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অভিযানের সফলতার জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনে সব বিষয় আমরা প্রকাশ না করলেও জনসাধারণের যেটুকু জানা প্রয়োজন আমরা তা গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করব।
সেনাপ্রধান বলেন, সংগঠনটির সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের শান্তি আলোচনা চলছিল। আলোচনা চলাকালে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কোনো অভিযান পরিচালনা করিনি। তারা দু’বার শান্তি আলোচনায় বসেছে। তৃতীয়বার বসার কথা বলেছে। তাদের স্টার সানডেতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রুমার গীর্জায় উপহার পাঠানো হয়েছে। আমরা তাদের বিশ্বাস করেছিলাম। তাদের ষড়যন্ত্র আমরা বুঝতে পারিনি।
গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে এবং গত বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে রুমা ও থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় পাহাড়ের সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) শতাধিক অস্ত্রধারী। তারা টাকা লুট করে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে, একজন ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও আনসারের ১৪টি অস্ত্র ও গুলি লুট করে নিয়ে যায় তারা। এসব ঘটনায় কেএনএফ জড়িত বলে নিশ্চিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।