আন্ডারওয়ার্ল্ডে বিএনপি তৃপ্তি’র নয়াঅধ্যায়
বিশেষ প্রতিনিধি : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আফতাব আহমাদ হত্যাকাণ্ডের এক যুগ পর সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে বিএনপির সাবেক এমপি মফিদুল ইসলাম তৃপ্তিকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।বুধবার রাতে রাজধানীর বনানী এলাকায় তৃপ্তির বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। যশোরের শার্শা থেকে নির্বাচিত সাবেক এমপি মফিদুল ইসলাম তৃপ্তি বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দলটির দফতর সম্পাদক ছিলেন। ২০০৭ সালে সংস্কারবাদী হিসেবে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
ড. আফতাব হত্যা মামলায় এর আগে ২০০৮ সালে গ্রেফতার শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল হাসান ইমনের জবানবন্দিতে বেরিয়ে আসে তৃপ্তির নাম। আদালতে দেওয়া তার জবানবন্দি অনুযায়ী, আফতাফ হত্যায় মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছিলেন মফিদুল ইসলাম তৃপ্তি। ২০০৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোডে বিশ্ববিদ্যালয় কোয়ার্টারের চতুর্থ তলায় সন্ত্রাসীরা বাসায় ঢুকে অধ্যাপক আফতাবকে গুলি করে।
তিন দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় তার স্ত্রী শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের একযুগ পর একজন আসামিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এর আগে ওই মামলায় আরও চারজন গ্রেফতার হলেও তারা জামিনে রয়েছেন। সিআইডির কোতয়ালী ইউনিটের এএসপি আজিজুল বলেন, ড. আফতাব হত্যা মামলায় একজন আসামির জবানবন্দিতে মফিদুল ইসলাম তৃপ্তির নাম আসে। এরপর তারা যাচাই করে তাকে গ্রেফতার করেন।সিআইডির পরিদর্শক সুব্রত কুমার সাহা বলেন, এর আগেও সন্দেহভাজন আসামি তৃপ্তিকে গ্রেফতারে অভিযান চালানো হয়। পলাতক থাকায় তাকে এতোদিন পাওয়া যায়নি।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই মামলায় ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল হাসান ইমন জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে ইমন জানান, তিনি ভারতে অবস্থানকালে তানভীরুলের সহযোগী (আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী তানভীরুল হাসান জয়) কাঁকন ও ল্যাংড়া তাজগীর তাকে বলেছিলেন, তানভীরুল ও তার লোক আবলান, রফিক, এতিম বেলাল, খোকন ও মাহবুব ড. আফতাব হত্যায় যুক্ত।
আবলান, রফিক ও এতিম বেলাল বাসায় গিয়ে আফতাবকে গুলি করে। হত্যাকাণ্ডের জন্য তারা হাওয়া ভবন থেকে মফিদুল ইসলাম তৃপ্তির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা পেয়েছিলেন। আরেক সন্ত্রাসী সোয়েব সাইফ ডিকন ও তানভীরুলের একজন ক্যাশিয়ার এই লেনদেন সম্পন্ন করেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ইমনের জবানবন্দিতে যাদের নাম এসেছে, তাদের মধ্যে তানভীরুল এখনও ভারতে পলাতক।
খোকন ২০০৬ সালে রমনায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন, আবলান ২০০৮ সালের নভেম্বরে মোহাম্মদপুরে খুন হন। রফিক, এতিম বেলাল ও মাহাবুবের পুরো ঠিকানা এখনও পাওয়া যায়নি। ২০০৮ সালের আগেই সোয়েব সাইফ এবং আরও দুই সন্দেহভাজন হুমায়ুন কবীর মুন্না ও সালেহ আহম্মদ সুজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তারা স্বীকারোক্তি দেয়নি। বর্তমানে তারা জামিনে আছেন।