আগামী নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে:প্রধানমন্ত্রী
বিশেষ প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। কাজেই তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের সব দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকাকে বিজয়ী করার জন্য কাজ করতে হবে। এর কোনো ব্যকিত্রম চলবে বলেও নির্দেশনা দেন তিনি । বৃহস্পতিবার গণভবনে দলটির তৃণমূলের কয়েকটি জেলার নেতারা সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এমন নির্দেশনা দেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে অধিকাংশ সাংগঠনিক জেলার সম্মেলনের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে। নির্বাচিত কয়েকটি জেলার নেতারা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার পরে গণভবনে যান। দুপুর ১২টার পর থেকে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন দলীয় সভাপতি। তিনি সাংগঠনিক খোঁজ-খবর নেওয়ার পাশাপাশি সম্মেলন হওয়া জেলাগুলোর নেতাদের দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটির করার নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি আগামী জাতীয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে জানিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার জয়ে কাজ করাও তাগিদ দেন।
দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকা, নোয়াখালী, খুলনা জেলা ও মহানগর, নেত্রকোনা, কুমিল্লা উত্তর এবং রাজশাহী মহানগরসহ কয়েকটি জেলা ও থানা আওয়ামী লীগের নেতারা। বৈঠকে উপস্থিত এক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে দলীয় সভাপতির কাছে গিয়েছিলাম। সেখানে বিভিন্ন জেলার নেতারা সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। তিনি আমাদের কথাও মনোযোগ দিয়ে শুনেন এবং নানান পরামর্শ দেন।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে সব ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ ভুলে নৌকার ঐক্যবদ্ধ প্রচারণা এখন থেকে শুরু করার জন্য নেতাদের নির্দেশনা শেখ হাসিনা দেন বলে বৈঠকে উপস্থিত একটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জানান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য বলেন। একই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের উন্নয়নের কর্মকাণ্ডগুলোকে সাধারণ জনগণের সামনে তুলে ধরার কথা বলেন। বিশেষ করে যার যার এলাকায় সরকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলো তুলে ধরার পরামর্শ দেন তিনি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছেন বলে তৃণমূল নেতাদের জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি নেতাদের বলেন, আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। এরই মধ্যে জরিপও করেছি। জরিপে যাদের অবস্থান ভালো এবং জয়ী হওয়ার মতো সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে যাদের কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ ও কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক নেই তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।
এদিকে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, উপস্থিত দু-একজন নেতা স্থানীয় সমস্যা এবং কোন্দল নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে নালিশ দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। তিনি দলীয় সভাপতির কাছে অভিযোগ করেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পরেও তাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার করা হচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে তাকে আক্রমণ করা হচ্ছে। ডাবলু সরকার অভিযোগ করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের ইন্ধনেই তাকে স্থানীয় রাজনীতিতে অসহযোগিতা করা হচ্ছে।
জবাবে শেখ হাসিনা ডাবলু সরকারকে বলেন, আমি তোমাকে সাধারণ সম্পাদক বানাইছি। কে কি বললো সেটা দেখা তোমার দায়িত্ব না।তুমি তোমার কাজ কর।
বিষয়টি জানতে ডাবলু সরকারের ব্যক্তিগত নম্বরে কল করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে ঘটনা লিখে এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।