আকস্মিক দেশে ফিরতে পারেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান
প্রিয়া রহমান. ঢাকা: ছোট ভাই কোকোর মৃত্যু মায়ের অসুস্থতাসহ চলমান আন্দোলনে শরীক হতে আকস্মিক দেশে ফিরতে পারেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক সিনিয়র নেতা জাতিরকন্ঠকে জানান, দেশে ফেরার জন্যে আকুল হয়ে উঠেছে তারেকের মন। ইতিমধ্যে তারেক বিষয়টি তাঁর মাকে জানিয়েছেন।মা খালেদা জিয়া এ বিষয়ে তারেককে পরামর্শ দিয়েছেন।
যদিও তারেক দেশে ফিরলে তাকে কারাগারে যেতে হতে পারে এ বিষয়টি জেনেও তারেক দেশে ফিরতে আকুল হয়ে উঠেছেন।
এদিকে লন্ডন থেকে সূত্র জানায়, দেশে ফেরার জন্যে তারেক রহমান গ্রাউন্ড ওয়ার্ক শরু করেছেন। কোকোর গায়েবানা জানাজা শেষে তিনি একথা তাঁর একাধিক ঘনিষ্ঠজনকে জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ঠরা জানান, শনিবার ও রোববার লন্ডনে ছুটি থাকার কারণে অফিসিয়াল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছেন না। সোমবার থেকে এটা শুরু করবেন। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করার পর দ্রুত করা সম্ভব হলেই তিনি আসবেন। আর সেটা না হলে তার পক্ষে দেশে আসার ইচ্ছে থাকলেও আসা সম্ভব হবে না। সব মিলিয়ে তারেক রহমান তার দেশে আসার বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন। তবে তিনি আসলেও তার স্ত্রী ও কন্যা আসবেন কিনা এই ব্যাপারে কোন কিছু নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
লন্ডন থেকে একটি সূত্র বলেছে, তারেক রহমান ভাইয়ের লাশ নিয়ে দেশে যেতে পারেন বলেই মালয়েশিয়া থেকে কোকোর লাশ দেশে নিয়ে যেতে বার বার সময় ঠিক করা হচ্ছে। এখনও চুড়ান্ত হয়নি ঠিক কখন লাশ দেশে নেওয়া হবে। সোমবার তারেক রহমান দেশে আসার প্রক্রিয়া শুরু করলে তা শেষ হতে কত সময় লাগবে সেটা সম্পন্ন হওয়ার পরই সিদ্ধান্ত হবে। এখন পর্যন্ত এটি মঙ্গলবার আনার সিডিউল রয়েছে। সূত্র জানায়, তারেক রহমান তার ভাইয়ের লাশ নিয়ে দেশে আসার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন তার ঘনিষ্ট কয়েকজনের কাছে। তারা তাকে বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে বলেছেন। এছাড়াও তার ভাইয়ের গায়েবানা জানাজায় অংশ নিয়েও এরপর নিকটজনদের কাছে ভাইয়ের জানাজা দেশের জনগনকে নিয়ে নিরাপদে পড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করছেন।
এদিকে রোববার আরাফাত রহমান কোকোর নামাজে জানাজা ইস্ট লন্ডন মসজিদের পেছনে অবস্থিত আলতাব আলী মাঠে বেলা সাড়ে তিনটায় আসরের নামাজের পর অনুষ্ঠিত হয়। গায়েবানা জানাজায় অংশ নেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপির নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা এবং সেখানে বসাবাসরত বাংলাদেশের সাধারন মানুষ।
ওই জানাজা পড়ান স্থানীয় ফোর্ড স্কয়ার মসজিদ এর ইমাম আলহাজ্ব মাওলানা শামসুল হক। জানাজার শেষ অংশে ইমাম সাহেব দোয়া পড়ানোর আগে তারেক রহমান ভাইয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চান। এই সময়ে তিনি বলেন, আমার ভাই মারা গেছে, আমার ভাইয়ের জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন। আল্লাহ যাতে তাকে বেহেশত নসিব করেন। সেই জন্য প্রার্থনা করেন। এরপর বলেন, আমার মা শারিরিকভাবে অসুস্থ। মায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চান। বলেন, আমার মা ভীষন অসুস্থ আপনারা আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন। যাতে তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন।
এরপর তিনি দোয়া চান দেশবাসীর জন্য। বলেন, চলমান গণআন্দোলনে যারা মারা গেছেন তাদের জন্য দোয়া চান। আল্লাহ যেন তাদের সবাইকে শান্তি দেন সেই জন্য দোয়া করবেন। তাদের শোক সন্তর্প পরিবারের সদস্যরা শোক কাটিয়ে উঠতে পারেন সেই জন্য প্রার্থনা করেন। সব শেষে তিনি দেশের সকল মানুষ যাতে শান্তিতে থাকেন ও সবাইকে তারা ভাল রাখতে পরেন এই জন্য দোয়া করেও সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। সবাই যাতে নিরাপদে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন সেই দোয়াও করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের একটি ঘনিষ্ট সূত্র জানায়, তারেক রহমান তার ভাইয়ের মৃত্যুতে দেশে আসতে চাইছেন। এদিকে তার ভাইয়ের মৃত্যু অন্যদিকে তার মায়ের অসুস্থতা সব মিলিয়ে তিনি আর লন্ডনে থাকতে চাইছেন না। দেশে ফেরার কথা তিনি তার মা ও ঘনিষ্ট জনকে জানিয়েছেন। তারা সব দিক বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই হিসাবে তিনি সব দিক খতিয়ে দেখছেন।
তবে এই ব্যাপারে তার ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, তিনি তার ওই ঘনিষ্ট জনদরকেও এটা বলেছেন তার ইচ্ছে তার ভাইয়ের লাশের জানাজা দেশের জনগনকে নিয়ে পড়া।তার ঘনিষ্ট সূত্র জানায়, তারেক রহমান দেশে আসার জন্য ভেতরে ভেতরে কাজ শুরু করেছেন। অফিস ছুটি থাকার কারণে সেখানকার অফিসিয়াল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারছেন না। সেটা সেখানকার সোমবার করবেন।
এদিকে একটি সূত্র জানায়, তারেক রহমানের দেশে আসার বিষয়ে আইনী জটিলতার কথাগুলো স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, আমি নিরাপদে জানাজা পড়তে চাই।সূত্র জানায়, সরকারের ইচ্ছে তারেক রহমান দেশে আসলে তাকে বিমানবন্দর থেকেই আটক করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া। এরপর তিনি চাইলে সরকার তাকে ভাইয়ের জানাযায় অংশ নেওয়ার জন্য প্যারোলে মুক্তি দিবেন।
তবে তারেক রহমান মনে করছেন যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ভুলে তার ভাইয়ের কাছে গেছেন সমবেদনা ও শোক জানাতে সেখানে তারেক রহমানও দেশে ফিরলে তাকে সব ভুলে নিরাপদে ভাইয়ের জানাজায় অংশ নিতে দিবেন। কোন ধরনের বাঁধা দিবেন না। বিষয়টি শোকের বিষয় বলেই বিবেচনা করবেন।