অস্ত্রের ট্রেনিং নেয়া ঢাবি শিক্ষক মতিয়ার নিয়ে তুলকালাম
ঢাবি প্রতিনিধি : অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নেয়াই কাল হচ্ছে ঢাবি শিক্ষক মতিয়ারের। জানা গেছে, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে সংবাদের শিরোনাম হওয়া সেই শিক্ষককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রভাষক পদ থেকে সম্প্রতি তাকে পদোন্নতি দিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয়েছে।
প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একজন সমালোচিত ও বিতর্কিত ব্যক্তিকে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তি হলেন মো. মতিয়ার রহমান। তিনি একসময় ইবির পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক ছিলেন।
পরে নিয়োগ পান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। জগন্নাথের প্রভাষক থাকাবস্থায় তিনি সাবেক কর্মস্থল ইবিতে গিয়ে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামে।বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই মতিয়ার ঢাবিতে প্রভাষক পদে নিয়োগ পান। সম্প্রতি তাকে পদোন্নতি দিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয়েছে।
২০১৪ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) সংলগ্ন নির্জন স্থান মফিজ লেকে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নেন মতিয়ার রহমান এবং ইবির গণিত বিভাগের সাবেক শিক্ষক ও বর্তমান বিসিএস ক্যাডার (অর্থনীতি) আজিজুল হক মামুন। এ দু’জনের মধ্যে মামুন ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি। মতিয়ার ছিলেন মামুনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা একই সঙ্গে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তাদের প্রশিক্ষণ দেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজিবুল ইসলাম সজিব।
বিতর্কিত ব্যক্তিকে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ায় ঢাবিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সমালোচিত ব্যক্তিকে শিক্ষক নিয়োগ এবং পদোন্নতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবির পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ জলিল বলেন, ‘সে (মতিয়ার) নিয়োগ পেয়েছে ৯-১০ মাস হতে যাচ্ছে। এতদিন কিছুই জানতে পারিনি। আর আসলে এটা আমার ব্যাপার না। প্রশাসন আছে তারা নিয়োগ দেয়। আমরা ডিপার্টমেন্টে চাকরি করি মাত্র।’
তিনি জানান, বিভাগের বাছাই কমিটি থেকে যখন মতিয়ারের নাম যায় তখন তিনি বিষয়টি জানতে পারেননি। জানার পরে কী ব্যবস্থা নেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক এমএ জলিল বলেন, ‘এটা আগে থেকে কিছুই বলতে পারব না। কারণ আমি কিছুই জানি না। আর জানলেও আমার কিছু করার আছে কিনা, সেটি নিয়েও আমি নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না।’বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।