অলৌকিক তিন পা’ শিশু চৈতির ২মলাশয় ২যৌনাঙ্গ ২মলদ্বার ?
অস্ট্রেলিয়া থেকে মিলান ফরাবি : বাংলাদেশের অলৌকিক তিন পা’ শিশু চৈতি অবশেষে সুস্থ হচ্ছে।অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসকরা কয়েক মাস গবেষণা করে তার চিকিৎসা পদ্ধতি আবিস্কার করেন।একই সঙ্গে চৈতির শরীরের ২ মলাশয় ২ যৌনাঙ্গ ২ মলদ্বার এর চিকিৎসা চালিয়ে সফলতা অর্জন করেন।সেই চৈতি শিগগির ফিরছে দুই পায়ে হেটে অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরছে।কিভাবে এতকিছু সম্ভব হলো?
চিকিৎসকরা জাতিরকন্ঠকে জানান, চৈতি জন্মেছিল তিনটি পা নিয়ে। তার তৃতীয় পা এসে যুক্ত হয়েছিল তার বস্তি প্রদেশের নিম্মাংশে। এই অস্বাভাবিক শারীরিক গঠন নিয়ে তিন বছর অনেক
বিড়ম্বনার পর চিকিৎসার জন্য তাকে পাঠানো হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানকার চিকিৎসকরা সফল অস্ত্রপচারের মাধ্যমে তার তৃতীয় পা কেটে বাদ দিতে সক্ষম হয়েছেন। সুস্থ হয়ে এখন বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছে চৈতি।
চৈতির বয়স এখন তিন বছর। যে অস্বাভাবিকতা নিয়ে তার জন্ম, সেটিকে চিকিৎসকরা বলেন ‘কওডাল টুইনিং’। এর মানে হচ্ছে মায়ের জরায়ুতে তার সঙ্গে এক যমজও ছিল। কিন্তু যমজ বিকশিত হয়েছে চৈতির শরীরে। সেই যমজের একটি পা চৈতির দেহের বস্তিপ্রদেশের সঙ্গে যুক্ত ছিল। চৈতি একই সঙ্গে আংশিকভাবে অন্ধ।
চৈতিকে চিকিৎসার জন্য অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর ব্যবস্থা করে একটি বেসরকারি সংস্থা চিলড্রেন ফার্ষ্ট ফাউন্ডেশন।কিভাবে তার তৃতীয় পা কেটে বাদ দেয়া যায় সেটি নিয়ে কয়েক মাস ধরে মাথা ঘামাতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসকদের।
ভিক্টোরিয়ার মনাশ চিলড্রেন্স হসপিটালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ড: ক্রিস কিম্বার বলেন, চৈতির মতো শারীরিক বৈকল্য নিয়ে জন্মানো খুবই বিরল। এ কারণে এই অপারেশনটি ছিল খুবই জটিল। অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর আগে চৈতির শরীরে বাংলাদেশের চিকিৎসকরাও অনেক অপারেশন করেছেন। অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসকরা তাদের কাজ শুরুর আগে বাংলাদেশের এই চিকিৎসকদের সঙ্গেও শলাপরামর্শ করেন।
এ সম্পর্কে ড: কিম্বার জানান, বাংলাদেশের চিকিৎসকরা চৈতির তৃতীয় পায়ের কিছু অংশ কেটে বাদ দিতে পারলেও তার বস্তিপ্রদেশে দুই পায়ের মাঝে আরও অনেক কিছু রয়ে গিয়েছিল। যেহেতু সেখানে আরেক যমজের শরীরের অনেক অংশ ছিল, তাই চৈতি আসলে বহন করছিল দুটি মলাশয়, দুটি যৌনাঙ্গ এবং দুটি মলদ্বার। এবং এসব অংশ বিকশিত হচ্ছিল শরীরের খুবই অস্বাভাবিক একটি অংশে।
অনেক পরিকল্পনার পর গত নভেম্বরে চৈতির শরীরে অপারেশ চালানো শুরু হয়। তৃতীয় পায়ের যে অংশটি তখনো ছিল, সেটি চিকিৎসকরা প্রথমে অপসারণ করেন। এরপর তাদের চৈতির শরীরের ঐ অংশটি জোড়াতালি দিয়ে নতুন করে গঠন করতে হয়।ড: কিম্বার জানান, চৈতি এখন হাঁটতে পারে, দৌড়াতে পারে। তার ওজনও বাড়ছে।
তবে চৈতির বয়স যত বাড়বে, তার আরও অনেক নতুন অপারেশনের দরকার হবে। তবে এখন বাংলাদেশে ফিরে যেতে কোন সমস্যা নেই। চৈতির মা সীমা খাতুন অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি বাংলাদেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন।সব কিছুই এখন ঠিকঠাক। ও এখন অন্য শিশুওেদর মতো খেলতে পারে, সেও এখন অন্য শিশুদের মতো।