• বুধবার , ২০ নভেম্বর ২০২৪

ঐক্যবদ্ধ থাকুন জয় নিশ্চিত-হাসিনা


প্রকাশিত: ৯:৫৬ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ১৭ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৫ বার

 

প্যারিস থেকে ইকবালুর রহিম  বাহার :  আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ জয় নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আগামী সাধারণ Hasina-frence-www.jatirkhantha.com.bd-1নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীদের প্রতি ঐক্য জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করব।

কারণ, জনগণ আমাদের পক্ষে রয়েছে। জনগণ আমাদের ভোট প্রদানের জন্য প্রস্তুত। তাই আমাদের সাবধান থাকতে হবে, যাতে কেউ নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে না পারে।’
গত মঙ্গলবার রাতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল প্যারিস লা গ্রান্ডে আওয়ামী লীগের ফ্রান্স শাখা আয়োজিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর আমন্ত্রণে ওয়ান প্ল্যানেট শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গত সোমবার তিন দিনের সরকারি সফরে প্যারিস যান।

দলের নেতা-কর্মীদের দলকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ত্যাগের মাধ্যমেই দলের সর্বস্তরে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। দলের মধ্যে বিভাজন ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, কিন্তু সবাই একতাবদ্ধ থাকলে সে সুযোগ তারা পাবে না।শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই জনগণ উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে পারে। আর বিএনপি তাদের নিজেদের ভাগ্য গড়ে তুলতেই ক্ষমতায় আসে। ভোট চুরি, দুর্নীতি, ব্যাংকের টাকা লোপাট, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ তখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে যায়।

তিনি পুনর্নির্বাচিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা পুনরায় নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসব, ইনশা আল্লাহ এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি অব্যাহত থাকবে।’পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেনসহ ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা প্রায় ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত এই সংবর্ধনায় যোগ দেন।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ১৯৭৫ সালের পর পিছিয়ে দেওয়া এবং যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসিত করা শক্তি যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে, এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান। তিনি সন্ত্রাস, হত্যা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদের লুটপাটHasina-frence-www.jatirkhantha.com.bd-19, খুন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষকে সজাগ করতে হবে। তাদের ক্ষমতায় আসা মানে আবার মানুষ খুন করা, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, লুটপাট করা। প্রবাসীদের এ সময় দেশে থাকা আত্মীয়স্বজনদের বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন করারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

দেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৬ বছর পেরিয়ে গেলেও ৩০ বছর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি দেশ শাসন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অথচ ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই দেশের মানুষ উন্নয়নের প্রকৃত স্বাদ লাভ করে।শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য নিজেদের চ্যাম্পিয়ন দাবি করে অথচ তারা আসলে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে পুনর্বাসিত করেছিল এবং দেশে কারফিউয়ের গণতন্ত্র চালু করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করে পুরো একটি প্রজন্মকেই দেশের প্রকৃত ইতিহাস জানা থেকে বিরত রাখে। তারা বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু ইউনেসকো বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ হিসেবে তাদের মেমোরি রেজিস্টারে এই ভাষণের অন্তর্ভুক্তি সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এবং দেশকে মুক্ত করায় সর্বদা ভূমিকা পালন করেন এবং দেশের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রাখেন। শেখ হাসিনা বিশেষ করে সাবেক সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে তাঁদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, তাঁদের সহযোগিতা সব সময়ই তাঁকে (শেখ হাসিনা) শক্তি ও সাহস জোগায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫-পরবর্তী সরকারগুলো বাংলাদেশকে বিশ্বে ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে পরিচয় করায় কিন্তু এখন বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশকে মর্যাদার চোখে দেখে। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা আর কেউ রুখতে পারবে না বলেও তিন উল্লেখ করেন।

দেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেশ দারিদ্র্যমুক্ত হলেই কেবল দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য, শিক্ষা, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা এবং হাউজিংয়ের সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।তাঁর সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের সম্পর্ক প্রতিটি ক্ষেত্রেই আরও জোরদার হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটও ফ্রান্সের একটি কোম্পানি তৈরি করছে এবং ২০১৮ সালের মার্চে এটি মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার গ্রামীণ অর্থনীতি জোরদার করার লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি অঞ্চলের উন্নয়নে সমান গুরুত্ব দিয়েছে। বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো হয়েছে, যা অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যের ওপরই দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। দেশের প্রত্যেক ঘরে ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুতের আলো পৌঁছাবে।