দ্য অপারেটর-ফায়ারিং দ্য শটস দ্যাট কিলড বিন লাদেন’
ডেস্ক রিপোর্টার : ওসামা বিন লাদেনের মুখে তিনটি বুলেট গেঁথে দিয়েছিলেন তিনিই। অন্য কেউ নয়, আল কায়দা নেতাকে তিনি একাই খতম করেছেন। এ বার এমনটাই দাবি করলেন মার্কিন নেভি সিল টিমের প্রাক্তন সদস্য রবার্ট ও’নিল।
সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বই— ‘দ্য অপারেটর: ফায়ারিং দ্য শটস দ্যাট কিলড বিন লাদেন’। এই বইয়ে ৯/১১ হামলার মূল চক্রীকে খতম করার বর্ণনা করে রবার্টের দাবি, গুলিতে ঝাঁঝরা ওসামার মুখ এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে শনাক্তকরণের জন্য তা জুড়ে একত্রিত করতে হয়। এই দাবির সত্যতা জানা না গেলেও ওই অভিযানের খুঁটিনাটি খোলসা করে গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগে সমালোচনার মুখে পড়েছেন রবার্ট।
পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে প্রায় নিশ্ছিদ্র দুর্গে স্ত্রী ও ১৭ জন ছেলেপুলে নিয়ে থাকতেন ওসামা। ২০১১-র ২ মে সেখানেই অভিযান চালান নেভি সিলের সদস্যেরা। রবার্টের দাবি, ঘটনার রাতে পাঁচ-ছ’জন নেভি সিল সদস্যকে নিয়ে তিনি ওই দুর্গে ঢোকেন। সিঁড়ি বেয়ে দুর্গের তিনতলার চাতালে উঠতেই সামনে পড়ে যান ওসামার ছেলে খালিদ। সঙ্গে সঙ্গে একটি স্তম্ভের আড়ালে লুকিয়ে পড়েন তিনি। তাঁর হাতে ছিল একে-৪৭।
নেভি সিলের এক এজেন্ট সে সময় আরবি ভাষায় বলেন, “খালিদ, এদিকে এসো!” উত্তরে খালিদ চিত্কার করে বলেন, “কী?” এর পর সামনে আসতেই তাঁর মুখে গুলি করা হয়। খালিদকে খতম করার পর তিনতলায় উঠে একের পর এক ঘরে তল্লাশি চালাতে থাকেন তাঁরা। ওই তিনতলাতেই ওসামার চার স্ত্রীর মধ্যে তিন জন থাকতেন। তাঁদের সঙ্গে অন্য সন্তানদের নিয়ে থাকতেন ওসামা।
তল্লাশি চালাতে চালাতে একটি পর্দাঘেরা ঘরের সামনে এসে দাঁড়ান রবার্ট ও তাঁর সঙ্গী। আশপাশে তখন আর কেউ নেই। রবার্ট তাঁর সামনের সঙ্গীর কাঁধে চাপ দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ইশারা করেন। আচমকা পর্দা সরিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়েন তাঁরা। তাঁদের দু’জনকে দেখে ঘরের মহিলারা আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠেন। রবার্টের সঙ্গী তাঁদের সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। রবার্ট এগিয়ে যান। ঘরের এক কোণেই বিছানার সামনে দাঁড়িয়ে ওসামা। সামনে তাঁর এক স্ত্রী। স্ত্রীর কাঁধেই হাত রেখে দাঁড়িয়ে ওসামা।
ওই বইয়ে রবার্ট লিখেছেন, “এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে ওই মহিলার ডান কাঁধের উপর লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ি ওসামার মুখে। পর পর দু’বার। ট্রিগারে চাপ দিতেই ওসামার মাথা ফেটে ছত্রখান। তিনি মাটিতে গড়িয়ে পড়েন। নিশ্চিত হতে ফের এক বার গুলি চালাই তাঁর মাথায়।” রবার্টের দাবি, এর পরই ঘরে ছুটে আসেন নেভি সিলের অন্য সদস্যরা। ঘরের আর এক কোণে একটি দু’বছরের বাচ্চার সঙ্গে তখনও কাঁপছিলেন ওসামার ওই পত্নী।
৯০ মিনিটের সেই অভিযান শেষে আফগানিস্তানে নিজেদের শিবিরে ফিরে আসেন রবার্টরা।