• রোববার , ২৪ নভেম্বর ২০২৪

২২ খাতে দুর্নীতি করছে তিতাস


প্রকাশিত: ৮:৪৪ পিএম, ১৭ এপ্রিল ১৯ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭২ বার

 

 

স্টাফ রিপোর্টার : ‘তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড’-এ দুর্নীতির ২২টি উৎস চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই উৎসগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি এসব দুর্নীতি প্রতিরোধে ১২টি সুপারিশ করেছে কমিশন।বুধবার সচিবালয়ে দুদকের এ সংক্রান্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কাছে হস্তান্তর করেন দুদকের কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান।

এসময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধ পরিকর। নির্বাচনী ইশতেহারেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে আইনের শাসন সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাত বাংলাদেশে বিনিয়োগের অন্যতম প্রধান খাত। এ খাত বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গঠনে উজ্জ্বল ভূমিকা রাখছে। এ খাতে কোনও অনিয়ম করতে দেয়া হবে না।প্রতিবেদনে তিতাসে দুর্নীতির ২২টি উৎস চিহ্নিত এবং এসব উৎস থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধে ১২টি সুপারিশ করার জন্য দুদককে ধন্যবাদ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাদের এই উদ্যোগ জ্বালানি খাতে দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর অবদান রাখবে। সম্মিলিত উদ্যোগেই উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হবে।

প্রতিবেদনে দুর্নীতির যে ২২টি উৎস চিহ্নিত করা হয় সেগুলো হলো- ১. অবৈধ সংযোগ, ২. নতুন সংযোগে অনীহা এবং অবৈধ সংযোগ বৈধ না করা, ৩. অবৈধ লাইন পুনঃসংযোগ, ৪. অবৈধ সংযোগ বন্ধে আইনগত পদক্ষেপ না নেয়া, ৫. অদৃশ্য হস্তক্ষেপে অবৈধ সংযোগ, ৬. গ্যাস সংযোগে নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ না করা, ৭. একই কর্মকর্তার একাধিক দায়িত্ব পালন, ৮. বাণিজ্যিক শ্রেণির গ্রাহককে শিল্প শ্রেণির গ্রাহক হিসেবে সংযোগ প্রদান, ৯. মিটার টেম্পারিং, ১০. অনুমোদনের অতিরিক্ত বয়লার ও জেনারেটরে গ্যাস সংযোগ, ১১. বৈধ সংযোগ দিতে হয়রানি, ১২. মিটার বাইপাস করে সংযোগ প্রদান সংক্রান্ত দুর্নীতি, ১৩. ইচ্ছাকৃতভাবে গৃহস্থালিতে

গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়া, ১৪. ইচ্ছাকৃতভাবে ইভিসি না বসানো, ১৫. দীর্ঘদিন ধরে শিল্প এলাকায় পোস্টিং, ১৬. এস্টিমেশন অপেক্ষা গ্যাস কম সরবরাহ করেও সিস্টেম লস দেখানো, ১৭. অবৈধ চুলাপ্রতি বৈধ চুলার সমান টাকা আদায় করে আত্মসাৎ, ১৮. গ্যাস বিক্রি বেশি দেখিয়ে আত্মসাৎ, ১৯. ভুয়া সংকেত দিয়ে অবৈধ গ্রাহকের কাছে বিল আদায়, ২০. আঞ্চলিক ব্যাংক হিসাব থেকে তিতাসের মাদার একাউন্টে যথাসময়ে টাকা স্থানান্তর না হওয়া, ২১. দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া বিল আদায় না করা, ২২. উল্লেখিত সমস্যা/দুর্নীতি ছাড়াও দরপত্রে অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ, মালামাল ক্রয়ে দুর্নীতি, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্তৃক সার্বক্ষণিক কোম্পানির গাড়ি ব্যবহার, জরিমানা, সংশোধিত বিল ও জামানত আদায়ে গ্রাস বিপণন নীতিমালা অনুসরণ না করা ইত্যাদি।

দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদকের পক্ষ থেকে যে ১২ সুপারিশ করা হয় সেগুলো হলো- ১. প্রি-পেইড মিটার, ২. আকস্মিক পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা, ৩. ফলোআপ, ৪. দীর্ঘদিন শিল্প এলাকায় এবং একই বিভাগে পোস্টিং না রাখা, ৫. জনবলের দক্ষতা বাড়ানো, ৬. অনিয়মের সাথে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি, ৭. অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ, ৮. অডিট আপত্তিগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা, ৯. সিস্টেম লসের সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ, ১০. নিজস্ব সার্ভিলেন্স এবং মোবাইল কোর্ট, ১১. নিজস্ব প্রসিকিউশন বিভাগ ও ১২. বকেয়া পাওনা আদায়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ।