১৬ বছর পর ভারতে প্রথম টেস্ট খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ
আসমা খন্দকার : ষোলো বছর পর দ্বি-পাক্ষিক চুক্তিতে ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে চলতি বছর অাগস্টের শেষ সপ্তাহে ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট খেলার কথা বাংলাদেশ দলের। সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদায় আইসিসি’র সাবেক সভাপতি প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়ার অবদানকে মাথায় রেখে একমাত্র টেস্টটি ইডেনে আয়োজন করতে বিসিসিআই-কে প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ( বিসিবি)। তবে এ বার সেই অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে বিসিবি।
অগস্ট জুড়ে কলকাতায় বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে বলে বিকল্প ভেন্যুতে টেস্টটি আয়োজনে ভারতীয় বোর্ডকে সম্প্রতি অনুরোধ করেছে বিসিবি। সম্প্রতি ইডেন গার্ডেন্সে টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখে দেশে ফিরে এ তথ্য জানিয়েছেন বিসিবি প্রধান নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। তিনি বলেন, “ইডেন গার্ডেন্সে টেস্ট ম্যাচটি হলে বাংলাদেশ থেকে অন্তত পাঁচ হাজার লোক খেলা দেখতে আসতেন। তাই আমরা চেয়েছিলাম টেস্টটি ইডেনে হলে আমাদের দর্শকদের জন্য ভাল হয়।
ইডেনের মতো ঐতিহ্যবাহী ভেন্যুতে টেস্ট খেলার সুযোগ কম কথা নয়। কলকাতার আবহাওয়া ঢাকার মতো বলে এখানে এসে খেলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি আমরা। টেস্টে যে ভাবে উন্নতি করছি,তাতে পাঁচ দিন ভারতের বিপক্ষে খেলা এখন আর অসম্ভব নয়। কিন্তু কলকাতায় অগস্ট মাসে বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়েছি। তাই ইডেনের পরিবর্তে ওই সময়ে যেসব ভেন্যুতে ঝড়-বৃস্টির সম্ভাবনা নেই সেখানে ম্যাচটি করার অনুরোধ করেছি।”
প্রস্তাবটি নাকি বিসিসিআইকেও দেওয়া হয়েছে। বিসিসিআই সচিব অনুরাগ ঠাকুর বিসিবি’র এই প্রস্তাব গুরুত্ব সহকারে দেখছেন বলে জানিয়ে বিসিবি সিইও বলেন, “সাধারনত হোম বোর্ডই ভেন্যু ঠিক করে থাকে। তাই ভেন্যু নির্ধারণের ব্যাপারটি বিসিসিআইর উপরই ছেড়ে দিয়েছি। এ ব্যাপারে বিসিসিআইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়টি তারাও গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।”
ঢাকা থেকে কলকাতার ফ্লাইট ভাড়া তুলনামূলক কম, তাই ইডেন গার্ডেন্সে টেস্টটি হলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অর্থ সাশ্রয় হওয়ার কথা। আবহাওয়া,খাদ্যাভাস এমনকী ভাষাগত সমস্যায়ও পড়তে হবে না বাংলাদেশ দলকে। তারপরও ইডেনে টেস্ট খেলতে চাইছে না বিসিবি। একমাত্র কারণ শুধু অগস্টের বৈরি আবহাওয়াই নয়। কলকাতায় বাংলা ভাষাভাষীদের বাস বলেই টি২০ বিশ্বকাপে ইডেন গার্ডেন্সে সুপার টেনে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দু’টিতে অধিকাংশ দর্শকের সমর্থনের প্রত্যাশা ছিল বিসিবির।
কিন্তু ওই ২টি ম্যাচে প্রত্যাশিত দর্শক সমর্থন পায়নি বাংলাদেশ দল। উল্টে ইডেনে প্রতিপক্ষ দলকে অধিক সমর্থন দিয়েছে কলকাতার দর্শক! ইডেন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণ সম্ভবত এটাও। ইডেনের উইকেট টি২০ বিশ্বকাপে ধাঁধায় ফেলেছে মাশরফিদের। ২৫ বছর পর ইডেনে খেলতে এসে বাংলাদেশ দল চেনাতে পারেনি নিজেদের।
অস্ট্রেলিয়া, ভারতের বিপক্ষে যেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়ে হেরেছে বাংলাদেশ দল, সেখানে ইডেনে হয়েছে ছন্দপতন। পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হেরেছে দল। এই ভেন্যুতে তেমন সুখময় অতীত নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাবের পেছনে এটাকেও বড় কারণ হিসাবে দেখছে বিসিবি।