‘১৬২০০ কোটির টাকার মালিক তারেক-দাউদের চেয়েও ভয়ংকর’
লন্ডন থেকে ইব্রাহিম খলিল ইশান : ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা বলেছে, ‘রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নয়, তারেক জিয়ার উত্থান হচ্ছে অন্ধকারের রাজা হিসেবে, একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী এবং মাফিয়া হিসেবে।’ সংস্থাটি তারেক জিয়াকে লন্ডনে রাখা কতটা নিরাপদ সে প্রশ্নও তুলেছে। তারা বলেছে, ’৯০ দশকে দাউদ ইব্রাহিমকে লন্ডনে আশ্রয় দেওয়াটা যুক্তরাজ্য সরকারের ভুল সিধান্ত ছিল। এখন ব্রিটেন ভুল করলে তার মাশুল দিতে হবে।’ তারা আরো বলেছে, দাউদ ইব্রাহিমের পর এশিয়ার নতুন ডন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন তারেক জিয়া।
রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, ‘২০১০-২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ অন্তত ১০ টি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার জন্য তারেক অর্থায়ন করেন।’ এর অডিও টেপও স্কটল্যান্ডের ইয়ার্ডের কাছে রয়েছে। তারেক জিয়া আবার নতুন করে বাংলাদেশ ও ভারতে সন্ত্রাস সৃষ্টি ও বিচ্ছিন্নবাদীদের উস্কানি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন বলেও রিপোর্ট করেছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড।
১৫ জন ব্রিটিশ এমপির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্বে অন্যতম সেরা গোয়েন্দা এবং তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে পরিচিত স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড তারেক জিয়ার ওপর তদন্ত করে। সম্প্রতি এই তদন্ত প্রতিবেদন ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন বিভাগে জমা দিয়েছে। স্কটল্যান্ডর ইয়ার্ড তাঁদের তদন্ত রিপোর্টে তারেক জিয়াকে ‘ভয়ংকর এবং ঠান্ডা মাথার খুনি হিসেবে চিহ্নিত করেছে ।
তারা বলেছে, ‘অর্থ উপার্জনের জন্য তারেক সবকিছুই করতে পারে।’ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বের ১১ টি দেশে মোট ২৭ টি জঙ্গি এবং সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তারেক জিয়ার নেটওয়ার্ক রয়েছে। ওই নেটওয়ার্ক শুধু বাংলাদেশের জন্য নয় ভারত, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।’ তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে ‘তারেক প্রায় ১২০ কোটি পাউন্ডের (বাংলাদেশি টাকায় ১৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা) মালিক। বিশ্বের ১৭ টি দেশে তাঁর অবৈধ সম্পদ রয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘তারেক ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত অন্তত ২৫৭ জনকে হত্যার নির্দেশদাতা। তাঁর নির্দেশেই ২০০১ এর অক্টোবরে বাংলাদেশে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। ২০০৪ এর আগস্টে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার নীলনকশা তৈরি করেন তারেক জিয়া। ওই নীলনকশা বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও অন্তত ২৩ জন মারা যান। ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এসএম কিবরিয়া সহ অনেক রাজনীতিবিদকে হত্যার পরিকল্পনা তারেক জিয়াই করেছিলেন।’
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ’এশিয়ার মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের সবথেকে বড় নেটওয়ার্কের অন্যতম কর্নধার হলেন তারেক জিয়া। উলফাসহ ভারতের বিচ্ছিন্নবাদীদের অবৈধ অস্ত্র সরবরাহ এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। বাংলাদেশেও জঙ্গি, সন্ত্রাসীদের অস্ত্র সরবরাহ করা হয় তারেক জিয়ার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে।স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড মনে করে, ‘এশিয়া শীর্ষ ডন দাউদ ইব্রাহিমের চেয়েও তারেক জিয়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভয়ংকর। তবে দুজনের অনেক মিল রয়েছে।
দুজনই পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই দ্বারা পরিচালিত। দুজনই প্রতিপক্ষকে দমনে হত্যা ও সন্ত্রাসকেই একমাত্র পথ মনে করে। দুজনই বিপুল অর্থের মালিক এবং বিশ্বাস করে অর্থ দিয়ে সব কেনা যায়। তবে দাউদ ইব্রাহিমের কোনো রাজনৈোতিক উচ্চাভিলাষ না থাকলেও তারেক জিয়ার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ আছে। এজন্যই তারক জিয়া দাউদ ইব্রাহিমের চেয়েও ভয়ংকর। কারণ, তারেক কালো টাকা আর অবৈধ অস্ত্র দিয়ে রাজনীতিতে সন্ত্রাসীদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে চান।’
তারেক জিয়ার সঙ্গে হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি, আরকান স্যালভেশন আর্মি, হিজবুল তাহরী সহ ২৭ টি জঙ্গি সংগঠনের সরাসরি যোগাযোগ আছে বলে তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘২০১০-২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ অন্তত ১০ টি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার জন্য তারেক অর্থায়ন করেন।’ এর অডিও টেপও স্কটল্যান্ডের ইয়ার্ডের কাছে রয়েছে। তারেক জিয়া আবার নতুন করে বাংলাদেশ ও ভারতে সন্ত্রাস সৃষ্টি ও বিচ্ছিন্নবাদীদের উস্কানি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন বলেও রিপোর্ট বলা হয়েছে।
তারেক জিয়াও দাউদ ইব্রাহিমের মতো বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে অর্থলগ্নি করেছেন। লোকজন ভয়েও তাঁকে নিয়মিত চাঁদা দেয়। তবে তাঁর প্রধান আয় হলো অস্ত্র ও অবৈধ মাদক ব্যবসা। এশিয়ার উদীয়মান এই ডন ভবিষ্যতে সারা বিশ্বেরই মাথাব্যাথার কারণ হতে পারে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এজন্য তাঁর বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।’