• বুধবার , ২০ নভেম্বর ২০২৪

১৬’শ সংশোধনী বহালে রিভিউ-কোমর বেঁধে নামছে সরকার


প্রকাশিত: ২:৩৫ পিএম, ৪ নভেম্বর ১৭ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৩ বার

হাইকোর্ট রিপোর্টার : সংবিধানের ১৬’শ সংশোধনী বহালে রিভিউ হচ্ছে অবশেষে। সব প্রক্রিয়া ঠিকমত সম্পন্ন করতে কোমর বেঁধে নামছে সরকার। Sanbidhan-www.jatirkhantha.com.bdসব দিক বিবেচনা করে, সর্বাত্মক খেয়াল রেখে কোথাও যাতে কোন আইনগত কোন ফাঁক-ফোকর  না থাকে সেজন্য খোদ আইনমন্ত্রী নিজেই তদারকি করছেন। আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ঠ উয়িং দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছে। এছাড়াও ১৬’শ সংশোধনী বাতিল রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়েও রিভিউ হবে।

এজন্য’ও কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়। ১৬’শ সংশোধনী বাতিল রায়ের পর্যবেক্ষণেও প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দেশের রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি, সুশাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।রায়ের এসব পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ আবেদন করবে বলে জানা গেছে।

anisul-www.jatirkhantha.com.bdএদিকে আজ সংবিধানে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেয়া আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে বৈঠক করছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সুপ্রিম কোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করীম জাতিরকন্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।জানা গেছে, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ছাড়াও রিভিউসংক্রান্ত প্রস্তুতি কমিটির ১০ সদস্য অংশ নিয়েছেন।

তারা হলেন-অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, মমতাজ উদ্দিন ফকির, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু, একরামুল হক টুটুল, সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর, মাসুদ হাসান চৌধুরী, খন্দকার দিলিরুজ্জামান, অমিত তালুকদার এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
বৈঠকে রিভিউয়ের বিষয়ে বিভিন্ন আইনগত দিক নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

আইন অনুযায়ী, আপিল বিভাগের রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে রিভিউ করতে হয়। গত ১১ অক্টোবর ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে অনুলিপি পেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর রিভিউ আবেদনের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলমের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

এ কমিটির সদস্যরা গত ১৫ অক্টোবর থেকে প্রতি কার্যদিবসে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ৭৯৯ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন তৈরির কাজ করেন। উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি ১ আগস্ট প্রকাশ করেন সুপ্রিমকোর্ট।

রায়ে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে এ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ন্যস্ত করা হয়। রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দেশের রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি, সুশাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

রায়ের এসব পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ আবেদন করবে বলে জানা গেছে। রায়ের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় ১০ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, মামলার ফ্যাক্ট অব ইস্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন ‘অনেক অপ্রাসঙ্গিক কথা’ প্রধান বিচারপতি তার রায়ে বলেছেন। ‘জাতীয় সংসদ সম্পর্কে কটূক্তি’ও করেছেন। পাশাপাশি পর্যবেক্ষণে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা কোনো একক ব্যক্তির কারণে হয় নাই’ বক্তব্যকে মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব অস্বীকার করার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

পরে ১৮ আগস্ট আনিসুল হক বলেছিলেন, পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে ১৪ সেপ্টেম্বর ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং তার কিছু পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে জাতীয় সংসদে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আদালত তার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সংসদে আনা সংবিধান সংশোধন বাতিলের এই রায় দিয়েছেন। এরপর কী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে তা স্পষ্ট করা না হলেও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, এ প্রক্রিয়ার কাজ তারা শুরু করেছেন। রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করবেন এবং তাতে তারা ‘কামিয়াব’ হবেন বলে আশাবাদী।