• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

হুন্ডি অর্থপাচারে কমছে রেমিট্যান্স


প্রকাশিত: ১১:৫০ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর ২৩ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪৩ বার

স্টাফ রিপোর্টার : গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় এ বছর প্রবাসী আয় কমেছে ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আগস্টে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও নিচে নেমেছে। সেপ্টেম্বরেও বৈদেশিক আয় কমার শঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ বছর অন্য বছরের তুলনায় ফরেন রেমিট্যান্স কমে যেতে পারে। এর প্রধান কারণ হুন্ডি ও অর্থ পাচার। একইসঙ্গে ব্যাংকিং চ্যানেলের সার্ভিস ঘাটতি, বৈধভাবে অর্থ প্রেরণের অতিরিক্ত খরচ এবং ডলারের বিনিময় হারের পার্থক্যের কারণেই প্রবাসী আয় বাড়ছে না। এটিএন বাংলার প্রধান কার্যালয়ে ডিবেট ফর ডেমেক্রেসির আয়োজনে ‘প্রবাসী আয়ের গতিশীলতা বৃদ্ধিতে করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অভিবাসন বিশ্লেষক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তিনি বলেন, সর্বশেষ বাজেট প্রস্তাবের সময় আমরা দাবি করেছিলাম ফরেন রেমিট্যান্সের উপর প্রণোদনা ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশে উন্নীত করা এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা প্রেরণ করলে কোনো বাড়তি খরচ না নেয়া। অথচ তা করা হয়নি। একজন প্রবাসী কর্মী বৈধ চ্যানেলে ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে ১শ’ টাকা পাঠালে প্রণোদনাসহ ১০২ টাকা ৫০ পয়সা পাবেন।

কিন্তু প্রবাসী কর্মীদের বৈধ চ্যানেলে ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাতে শতকরা ৩ টাকা বেশি খরচ হয়। সেই হিসেবে বৈধভাবে অর্থ পাঠালে শতকরা ৫০ পয়সা কমে যায়। যারা হুন্ডির মাধ্যমে কর্মীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে দেশে পাঠায় তারা শতকরা ৩/৪ টাকা বেশি পান। এ ছাড়া যারা হুন্ডিতে টাকা প্রেরণ করেন, তারা কর্মীর কর্মস্থল থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দেশে তার পরিবার-পরিজনের কাছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অর্থ পৌঁছে দেন। এতে কর্মীকে কষ্ট করে দূরে গিয়ে ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ করা লাগে না এবং কর্ম ঘণ্টাও নষ্ট হয় না। তাহলে কেন কর্মীরা কষ্ট করে লস দিয়ে বৈধ পথে অর্থ প্রেরণ করবেন! কিরণ বলেন, প্রতি বছর অর্থ প্রেরণকারী সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে সরকারি স্বীকৃতি প্রদান করে প্রয়োজনে পুরস্কারের ব্যবস্থা করে বৈধপথে টাকা প্রেরণ করতে উৎসাহিত করতে হবে। তাহলে রেমিট্যান্স প্রবাহের গতি আরও বাড়ানো সম্ভব হবে।

বায়রার সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাসার বলেন, ফরেন রেমিট্যান্সের গতিশীলতা বৃদ্ধিতে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ দূতাবাস, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ বায়রাকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। একইসঙ্গে আমাদের কর্মীদের বৈধ পথে অর্থ প্রেরণের সুফল সম্পর্কে অবগত করতে হবে। প্রবাসী কর্মীদের দূতাবাসের সেবা বাড়িয়ে ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণের সময় অযথা নানা রকম ফরম পূরণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

বায়রার সাবেক মহাসচিব মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ব্যাংকগুলোকে তাদের সার্ভিস কর্মীদের ধোরগোড়ায় পৌঁছানোর উদ্যোগ নিতে হবে। প্রবাসী আয়ের গতিশীলতা বৃদ্ধি শুধুমাত্র কর্মীর সদিচ্ছার উপরে নির্ভর করে না। যত সহজে কর্মী বাজারমূল্যে ডলারের বিনিময় হারে অর্থ প্রেরণ করতে পারবে, তত বেশি তারা বৈধ পথে দেশে অর্থ পাঠাবে। সেমিনারে এ ছাড়াও দৈনিক সমকাল এর বিজনেস এডিটর জাকির হোসেন ও এটিএন বাংলার এডিশনাল চিফ তাশিক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।