হিরোইনের রোল দেব, কিন্তু তুমিও কিছু দাও, বলা হয়েছিল আমাকে-অপরাজিতা
স্বরলিপি ভট্টাচার্য : প্রাক্তন ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক সোনা চৌধুরীর বই ‘গেম ইন গেম’ নিয়ে সম্প্রতি প্রবল আলোড়ন শুরু হয়েছে। সোনা মহিলা ফুটবলারদের উপর যৌন নির্যাতনের কথা প্রকাশ্যে এনেছেন। মুখ খুলেছেন কী ভাবে তাঁদের বাধ্য হয়ে সমকামী সেজে থাকতে হত! ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও কি মেয়েদের একই রকম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়? নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য।
সোনা চৌধুরীর বই ‘গেম ইন গেম’-এর কথা শুনেছেন তো? বইটা এখনও নিজে দেখিনি। তবে মহিলা ফুটবলারদের উপর যৌন নির্যাতনের কথা নিয়ে সোনা মুখ খুলেছেন বলে শুনেছি।ফিল্ম বা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতেও কি মেয়েদের একই রকম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়?
দেখুন, এখন বিষয়টা অনেকটা আলাদা। তবে আগে মানে ১৯৯৯-এ আমার কামব্যাকের আগে আমি নিজেও বিভিন্ন সমস্যা ফেস করেছি।
সত্যি নাকি?
হ্যাঁ। এ তো আমার নিজের অভিজ্ঞতা। হিরোইনের রোল অফার করা হয়েছে। সঙ্গে অন্য কিছুও অফার করা হয়েছে (অন্য কিছু মানে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন)। সে অফারে রাজি হইনি বলে হিরোইনও হতে পারিনি। কিন্তু একটা কথা তখন থেকেই বিশ্বাস করতাম, ভাল অভিনয় করতে পারলে কেউ আমাকে বাদ দিতে পারবে না।
কারা এ সব অফার করেন?
প্রযোজকরা। এই প্রযোজকরা তো বেসিক্যালি ছুঁচো। নিজেরা কিছু বলত না। মিডিয়েটারের মাধ্যমে অফার দিত।
মিডিয়েটাররা কী বলতেন?
ধরুন কোনও প্রযোজক কোনও চরিত্রে আমাকে নেওয়ার কথা বলেছেন। কয়েক দিন পর তাঁর কোনও অনুচর এসে বলবেন, ‘দাদা না তোমার সঙ্গে একটু আলাদা ভাবে কথা বলতে চান’— আমি পাল্টা বলতাম, আমার সঙ্গে আবার আলাদা কথা কী?
এটা তো প্রায় ওপেন সিক্রেট। ইন্ডাস্ট্রির অন্য কেউ কিছু বলতেন না?
দেখুন, সে সময় ভগবানের মতো পরিচালকরা ছিলেন। একটা ঘটনার কথা বলতে পারি, জগন্নাথ গুহর সঙ্গে তখন ‘ফেরিঘাট’ সিরিয়ালের শুটিং করছি। ওরকম একজন প্রযোজকের সেক্রেটারি এসে বলল, দাদা আপনার সঙ্গে একটু আলাদা করে কথা বলবেন। আমি কী বলব, জগাদা বলে উঠলেন, ‘ওকে গিয়ে বলে দাও কোনও … প্রযোজকের সঙ্গে অপরাজিতা আঢ্য দেখা করবে না।’ এ সব দেবতুল্য মানুষরা আমাদের আগলে রাখতেন।
এখন আর এ সব হয় না বলছেন?
দেখুন এখন আমার সঙ্গে এই অসভ্যতা আর হয় না। আর কেউ এ সব সমস্যায় পড়েছে বলে শুনিওনি। আসলে এখনকার ছেলেমেয়েরা নিজেদের অন্য রকম ভাবে হ্যান্ডেল করতে জানে। আর এখন তো অডিশন দিয়ে চ্যানেল থেকে সরাসরি সিলেক্ট করা হয়। ফলে এ সব ঝামেলার আশঙ্কা কম।