‘হাসিনা আবারও সরকার গঠন করবেন’
বিশেষ প্রতিনিধি : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, এ বছরের শেষে কোনো ঝামেলা ছাড়াই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে এবং তাতে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনা আবারও সরকার গঠন করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ফিরতে পারলে তা থমকে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
তিনি বলেছেন, “শেখ হাসিনার সরকার যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশ আরও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে। আর যদি খালেদা জিয়া এলে আমাদের সমৃদ্ধি থমকে যাবে, কেননা তিনি সমৃদ্ধির মানেই জানেন না।”শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের নুসা দুয়া কনভেনশন সেন্টারে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মিতসুহিরো ফুরুসায়ার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন মুহিত।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কোনো শঙ্কা দেখছেন কি না- এ প্রশ্নে মুহিত বলেন, “না, নির্বাচন ঘিরে কোনো ধরনের বিশঙ্খলা বা অনিশ্চয়তা দেখা দেবে না। কারণ, আমাদের রাজনীতিতে একটা ভালো পরিবর্তন এসেছে। কোনো উত্তাপ নেই…।অর্থমন্ত্রীর বিশ্বাস, এ বছরের শেষে কোনো ঝামেলা ছাড়াই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে এবং তাতে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনা আবারও সরকার গঠন করবেন।
আইএমএফের ডিএমডির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে মুহিত বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির সার্বিক অবস্থা নিয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।আমি তাকে বলেছি, বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের এই সরকারের সময়েই এ বিষয়ে একটা ব্যবস্থা নিয়ে রাখা হবে; যা পরবর্তী সরকার বাস্তবায়ন করবে।
বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফ বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিতে বুধবার ইন্দোনেশিয়ার বালিতে পৌঁছান অর্থমন্ত্রী মুহিত।বিশ্বের ১৮৯টি দেশের অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এবং সরকারি-বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে শুক্রবার সকালে এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বালি দ্বীপের নুসা দুয়া কনভেনশন সেন্টারে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের এই বার্ষিক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।পারস্পরিক দ্বন্দ্ব বা অসুস্থ প্রতিযোগিতায় না জড়িয়ে সমৃদ্ধ অর্থনীতির স্বার্থে সব দেশকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, গত ২৫ বছরে বিশ্বে অতি দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ১০০ কোটির বেশি কমেছে। এই সফলতা উল্লেখযোগ্য হলেও এখনও প্রায় ৭৪ কোটি মানুষ (৭৩৬ মিলিয়ন) অতি দরিদ্র।এই সংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে অর্ধেকে নামিয়ে আনতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা এবং তথ্য প্রযুক্তিতে জোর দিতে বিশ্ব নেতাদের আহ্বান জানান বিশ্ব ব্যাংক প্রধান।
আইএমএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন লাগার্দ বলেন, গত ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বের যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সমৃদ্ধি হয়েছে তা ‘অভূতপূর্ব’।কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতিতে সাম্প্রতিক কিছু বিরোধ এবং বাণিজ্য নিয়ে যে উত্তেজনা চলছে (যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের দিকে ইংগিত করে) তা বন্ধ না হলে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আগামী দুই বছরে ১ শতাংশ কমে যেতে পারে। এই উত্তেজনার অবশ্যই অবসান দরকার।
ইন্দানেশিয়ার সোলায়সী দ্বীপে সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও সুনামিতে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ২৭ সদস্যের একটি প্রতিনিদিল এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম রয়েছেন এই প্রতিনিধি দলে।