হারের উপক্রম দেখে পিছটান সরওয়ারের
বরিশাল প্রতিনিধি : প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন হারের উপক্রম দেখে পিছটান দিয়ে শেষমেষ ভোট বর্জন করলো বিএনপি প্রার্থী সরওয়ার। তবে বিএনপি প্রার্থী বলেছেন, নানা অনিয়মের অভিযোগের কথা। আর এই রেশ ধরে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার।
শুধু তিনি নন অারো কয়েক প্রার্থী নিয়ে তিনি বরিশাল সিটি ভোট বর্জন করেছেন। আজ সোমবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সরওয়ার নিজেই ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী ওবাইদুর রহমান ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের মেয়র প্রার্থী মনীষা চক্রবর্তী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সরওয়ার অভিযোগ করেন, গাজীপুর ও খুলনায় ভোটগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হলেও বরিশালে ভোট শুরুই করা হয়নি। ৭০ থেকে ৮০টি কেন্দ্রে ভোট শুরু না হতেই ব্যালটে নৌকার সিল মেরে বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। বিএনপি ও অন্য দলের কোনো প্রার্থীর এজেন্টদের ভোটকক্ষে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। নির্বাচনে প্রশাসনের ভূমিকা ন্যক্কারজনক—এমন অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আমি চারবার সাংসদ ও একবার মেয়র ছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সরকারের আমলেই এমন নজিরবিহীন ভোট আমরা দেখিনি। এমন প্রহসনের নির্বাচন না করে এমনিতেই ঘোষণা দিয়ে নিয়ে যেতে পারত সরকার।’
সরওয়ার বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম, এখানে প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় প্রার্থী, তাই সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনের আশ্বাসে আমরা আশ্বস্ত হয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের আগের আশঙ্কাই আজ ঠিক হলো।’সংবাদ সম্মেলনে সরওয়ার নৌকা প্রতীকে সিল মারা ১০ থেকে ১২টি ব্যালট সাংবাদিকদের দেখিয়ে বলেন, সদর গার্লস স্কুল কেন্দ্রে এভাবে ব্যালটে নৌকার সিল মেরে বাক্স ভর্তি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চান, নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুল হক, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ আহমেদ প্রমুখ।সরওয়ার ভোট প্রত্যাখ্যান করে এর প্রতিবাদে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয় ঘেরাও করার কর্মসূচি দেন। এরপর মিছিল নিয়ে তিনি নির্বাচন কার্যালয়ের দিকে রওনা দেন।
অন্যদিকে, ওবাইদুর রহমান ও মনীষা চক্রবর্তী সমর্থকদের নিয়ে ‘প্রহসনের নির্বাচন মানি না মানব না’, ‘ভোট চুরির নির্বাচন মানি না মানব না’—এমন বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বরিশাল সদর রোডে পৃথকভাবে মিছিল করছেন। এ সময় মনীষা গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন, তিনি সদর গার্লস স্কুল কেন্দ্রে গিয়ে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারতে দেখেন।
প্রতিবাদ করলে তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। অভিযোগ জানানোর পরও এই কেন্দ্রে নির্বাচন এখনো চলছে। এই কেন্দ্রের মতো সব কেন্দ্রেই নৌকায় সিল মারা হচ্ছে।এদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বরিশালে ভোট স্থগিত চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন।