হাজারীবাগের ট্যানারি সরাও-শিণ্পমন্ত্রীর আলটিমেটাম
বিশেষ প্রতিবেদক: আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি না সরালে কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। রোববার শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে শিল্পখাতের উন্নয়নে সরকার গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম মূল্যায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ও সংস্থা প্রধানদের নিয়ে আয়োজিত সভায় এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রোববারের এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। এতে শিল্প সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও করপোরেশনের প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী তিন দিনের মধ্যে হাজারীবাগ থেকে যেসব ট্যানারি স্থানান্তর হবে না, সেগুলোর নামে সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে বরাদ্দ করা প্লট বাতিলের নির্দেশও দিয়েছেন মন্ত্রী। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিসিক) রোববারই ট্যানারি মালিকদের কাছে আইনি নোটিস পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।
বিসিক ও ট্যানারি মালিকদের দুই সংগঠনের মধ্যে সই হওয়া সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, ট্যানারি মালিকদের ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে হাজারীবাগের সব ট্যানারি সাভারে স্থানান্তরের কথা ছিল। পরে আরও দুই দফা সময় বাড়িয়ে ট্যানারি স্থানান্তরের সময় গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে হাজারীবাগ থেকে অনেকে ট্যানারি স্থানান্তর করতে পারেননি।
সভায় চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর অর্থ ছাড় ও ব্যয়ের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় মন্ত্রী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের জন্য প্রতি ১০ দিন পর পর সংস্থা প্রধানদের নিয়ে মূল্যায়ন সভা ও অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য শিল্প সচিবকে নির্দেশনা দেন। সুনির্দিষ্ট সময়সীমা অনুযায়ী প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের কাজ বাস্তবায়নের বিষয়ে আরও তৎপর হতে সংশ্লিষ্ট সকলকে পরামর্শও দেন শিল্পমন্ত্রী।
সাভারে বাস্তবায়নাধীন চামড়া শিল্পনগরী প্রকল্পের অগ্রগতি মূল্যায়নকালে সভায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে চামড়া শিল্পনগরীতে সিইটিপির বর্জ্য পরিশোধন কাজ শুরু করতে হবে।’
তিনি জানান, যেসব ট্যানারি মালিক নির্মাণকাজে বিলম্ব করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা ট্যানারি স্থানান্তরের জন্য সরকারের দেয়া ক্ষতিপূরণের অর্থ নিয়েও কাজ বন্ধ রেখেছেন, তাদের হাজারিবাগের কারখানার মালামাল ক্রোক করা হবে।
সভায় ভোক্তা পর্যায়ে আয়োডিনযুক্ত ভোজ্য লবণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। এ লক্ষ্যে বাজার থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনকে (বিএসটিআই) নির্দেশনা দেয়া হয়। একইসঙ্গে লবণ আমদানিকারকদের তালিকা সংগ্রহ করে তাদের কার্যক্রম তদারকি ও বাজারে মধুর গুণগতমান পরীক্ষার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।