হলি আর্টিজান-হোটেলে ২০ বিদেশি জিম্মি-র্যাবের মেজর ও গুলশান থানার ওসিসহ গুলিবিদ্ধ ২৫
বিশেষ প্রতিনিধি : গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জিম্মি হয়ে পড়াদের মধ্যে আনুমানিক ২০ জনই বিদেশি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বেকারির সুপারভাইজার সুমন রেজা। তিনি বলেন, রাত পৌনে নয়টার দিকে আট থেকে ১০ জন যুবক অতর্কিতে আর্টিজানে ঢুকে পড়ে।তাদের একজনের হাতে ছিল তলোয়ার, বাকিদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র। ঢুকেই তারা কয়েকটি ফাঁকা গুলি করে এবং আল্লাহু আকবর বলে চিৎকার করে। তখন ভেতরে ২০ জনের মতো বিদেশি নাগরিক ছিলেন।
সুমন নিজে ও আর্টিজানের আরেকজন কর্মী (ইতালির নাগরিক) দোতলার ছাদ থেকে লাফিয়ে বাইরে আসতে সক্ষম হন।সুমন বলেন, ‘আমি ছাদে ছিলাম। ওরা যখন বোমা মারতে ছিল, তখন বিল্ডিং কাঁপতে ছিল। ওরা ১০-১২টা বোমা মারছে।মারতেই আছে, মারতেই আছে। ওরা সামনের দিকে স্টেপ নিচ্ছিল মনে হচ্ছিল। তখন ছাদ থেকে লাফ দেই।সুমন রেজা বলেন, ‘ভেতরে থাকা আমাদের কর্মীরা ফোন ধরতেছে না। আমাদের স্টাফদের মধ্যেও দুজন বিদেশি। আর্জেন্টাইন কর্মীর কোনো খোঁজ নেই।’
সর্বশেষ রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে ভেতর থেকে অস্ত্রধারীরা পরপর দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং বেশ কয়েকটি গুলি ছোড়ে। এ সময় চারদিকে ঘিরে থাকা র্যাব-পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দৌড়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে যায়।একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বেকারির সামনে আহত অবস্থায় পুলিশের পোশাকধারী কয়েকজনকে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পৌনে ১১টায় আবার গুলির শব্দ পাওয়া যায়। তার কিছুক্ষণ আগে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাহউদ্দিনসহ আহত কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
র্যাবের মেজর ও গুলশান থানার ওসিসহ গুলিব্ধি ২৫
গুলশানে এখন পর্ন্ত দফায় দফায় গুলি চলছে বলে জানা গেছে। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম গ্রেনেড চার্জ করে হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা।
গুলশানের ঘটনাস্থলে একটি সংবাদ সম্মেলন করে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ লাইভ অনএয়ার বন্ধ করতে বলেছেন।র্যাব মহাপরিচালক বলেছেন, ভেতরে যারা আটকা পড়েছেন তাদের বেশিরভাগই বিদেশি নাগরিক। তাদের উদ্ধারের জন্য অভিযান জানানো প্রয়োজন যা সরাসরি দেখানো সম্ভব নয়।তার বক্তব্য অনুযায়ী, কিছুক্ষণের মধ্যে জিম্মি উদ্ধারের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সারা দেশে আইন-শৃংখলা বাহিনী সতর্ক অবস্থায় আছে বলে জানা গেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১০ হাজার পুলিশ নিয়োজিত করা হয়েছে। গুলশান এলাকায় নিরাপত্তা বেষ্টনি জোরদার করা হয়েছে। কোনো গাড়িকে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। যেখানে যে গাড়ি রয়েছে তা সেখানেই থামিয়ে রাখা হয়েছে। সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে, ৮-১০ জন যুবক পিঠে ব্যাগ নিয়ে “আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর” শ্লোগান দিয়ে হামলা চালায়। পুলিশের ওপর ৯টায় গ্রেনেড চার্জ করা হয়।অসমর্থিত একটি সূত্রে জানা গেছে, ১ জন বিদেশি নাগরিক মারা গেছে। কমপক্ষে ১০ জন পুলিশ গুলিবিদ্ধ। ব্যাবের মেজর এবং বনানী থানার ওসিসহ কমপক্ষে ২৫ জন পুলিশ গুলিবিদ্ধ।