হলি আর্টিজানে কেয়ামত ‘দুঃস্বপ্ন’ সুরা পড়ে বাঁচলো বাংলাদেশীরা
এস রহমান : হলি আর্টিজানে স্বপরিবারে টানা ১৯ ঘন্টা আটকে ছিলেন বাংলাদেশী প্রকৌশলী হাসনাত করিম । সকালে আর্মির থান্ডারবোল্ড অপারেশনে মুক্ত হন তাঁরা। মুক্ত হয়ে তারা জাতিরকন্ঠকে জানান, হলি আর্টিজানে জঙ্গি অপারেশনের সময় তাদের সামনে যেন ঘনিয়ে এসেছিল কেয়ামতের ‘দুঃস্বপ্ন ‘। সুরা পড়ে মুসলমানের পরীক্ষা দেয়ার পর প্রাণে রক্ষা পায় বাংলাদেশীরা
১৯ ঘণ্টার ‘দুঃস্বপ্ন’–
কমান্ডো অভিযানে মুক্ত গুলশানের ক্যাফে থেকে উদ্ধার পাওয়া ব্যক্তিদের ১৯ ঘণ্টার ‘দুঃস্বপ্ন’ কাটছে না।শুক্রবার রাতে একদল বন্দুকধারী রাজধানীর কূটনীতিকপাড়ার হলি আর্টিজেন বেকারিতে ঢুকে বিদেশিসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে। সকালে কমান্ডো অভিযানে মুক্ত হন তাদের অনেকে।
এদের মধ্যে রয়েছেন প্রকৌশলী হাসনাত করিম। ১৩ বছর বয়সী সন্তানের জন্মদিন উদযাপন করতে স্পেনিশ এই ক্যাফেতে গিয়েছিলেন তিনি। তার সঙ্গে ছিল স্ত্রী শারমিন পারভীন এবং ৮ বছর বয়সী অন্য সন্তান।
রাতভর আটক থাকার পর সকাল ৮টার দিকে কমান্ডো অভিযানে হাসনাতের পরিবার উদ্ধার পায় বলে জানান তার মা। সন্তান, পূত্রবধূ ও নাতনীদের জন্য স্বামী এমআর করিমকে সঙ্গে নিয়ে সারারাত গুলশানে ছিলেন তিনি।
ছেলেকে পাওয়ার পর হাসনাতের মা বলেন, ভেতরে সাতজন বাংলাদেশি একজন ভারতীয়ের পাশাপাশি আরও ২০-২২জন বিদেশি ছিল। আক্রমণকারীরা ছিল ৫জন।
“জিম্মিকারীরা বাংলাদেশি মুসলমানদের সুরা পড়তে বলে। সুরা পড়তে পারার পর তাদেরকে রাতে খেতেও দেওয়া হয়। পারভীন হিজাব পরা থাকায় খাতির করা হয়।”
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে বলে সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ জানিয়েছে। তবে এই সংগঠনটির তৎপরতার খবর বাংলাদেশ সরকার নাকচ করে আসছে।
হাসনাত ২০ বছর দেশের বাইরে ছিলেন। ইংল্যান্ডে প্রকৌশল পড়াশোনার পর যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এমবিএ করেন। দেড় বছর আগে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
ক্যাফেটিতে থাকা বিদেশি কয়েকজনকে রাতেই হত্যা করা হয় বলে হাসনাত তার মাকে জানিয়েছেন।ভেতরে লাশ আছে জানালেও কয়জন নিহত হন এবং তারা কারা, সে বিষয়ে পুলিশ গণমাধ্যমকে কিছু জানায়নি।
অভিযানে পাঁচ হামলাকারী মারা পড়েন বলে র্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।সকালে ক্যাফে ঘুরে আসার পর এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “দেখেছি কয়েকটি লাশ পড়ে আছে। স্থানে স্থানে রক্তের দাগ।”
হলি আর্টিজন বেকারি গুলশান এলাকার বিদেশিদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়। সেখানে লনে অনেকই দেখা যেত চাদর বিছিয়ে রোদ পোহাতে। সবুজ লনে শিশুরাও খেলার পর্যাপ্ত জায়গা পেয়ে ছোটাছুটি করত।