• বুধবার , ২০ নভেম্বর ২০২৪

হলমার্ক দুর্নীতিবাজ সোশাল ইসলামি ব্যাংকের ৫ ঘাপলাবাজ কর্মকর্তাকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ


প্রকাশিত: ৪:২৫ পিএম, ২৫ জানুয়ারী ১৬ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১১৪ বার

aaaaaaaবিশেষ প্রতিবেদক : হল-মার্ক গ্রুপের ঋণ কেলেঙ্কারির নন-ফান্ডেড অংশের অনুসন্ধানে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) আরও পাঁচজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের পরিচালক ও এ-সংক্রান্ত অনুসন্ধান দলের প্রধান মীর জয়নুল আবেদিন শিবলীর নেতৃত্বে একটি দল আজ সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তাঁরা হলেন ব্যাংকটির বংশাল শাখার ভিপি ও শাখা ব্যবস্থাপক মো. তাহির-উজ-জামান, একই শাখার এফএভিপি ও অপারেশন ম্যানেজার আহাম্মদ আজিম, সিনিয়র অফিসার রুবাইয়াত আনা, রোকেয়া সরণি শাখার এফএভিপি মো. সফিউল্লাহ ও দনিয়ার রসুলপুর শাখার সিনিয়র অফিসার সাইফুল কবীর আহমেদ।

রোববারও ব্যাংকটির পাঁচজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গতকাল আরও ছয়জন কর্মকর্তাকে তলব করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এসআইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো চিঠিতে ওই ছয়জনকে ২ ফেব্রুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

যাঁদের তলব করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের এভিপি (মার্কেটিং অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগ) সেলিমা আলম, উত্তরা শাখার ভিপি ও ম্যানেজার মঞ্জুরুল হক শোয়েব, বনানী শাখার এসএভিপি ও ম্যানেজার নিয়ামত উদ্দিন আহমেদ, একই শাখার ম্যানেজার অপারেশন মাসুদুর রহমান সুন্নামত, এফএভিপি এটিএম সাখাওয়াত হোসাইন ও অফিসার (ক্যাশ) রেহেনা আক্তার খান।

এর আগে একই ঘটনার অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ১০ ও ১১ জানুয়ারি জনতা ব্যাংকের নয় জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদক সূত্র জানায়, হল-মার্কসহ ছয়টি কোম্পানি সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল শাখা থেকে তিন হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। এ কেলেঙ্কারি নিয়ে দুদক অনুসন্ধান শুরু করে ২০১২ সালে।

এর মধ্যে স্বীকৃত বিলের বিপরীতে সোনালী ব্যাংকের পরিশোধ করা ফান্ডেড ১ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা অনুসন্ধান শেষে ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর হল-মার্ক গ্রুপের এমডি তানভীর মাহমুদ, তাঁর স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ূন কবির, সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল শাখার ডিজিএম এ কে এম আজিজুর রহমানসহ ২৭ জনকে আসামি করে ১১টি মামলা করে দুদক।

হল-মার্কের এমডি তানভীরসহ কয়েকজন আসামি বর্তমানে কারাগারে। এ কে এম আজিজুর রহমান মারা গেছেন। এসব মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়। ৩৮৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাকি পাঁচ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে ২৭টি।

কিন্তু ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে হল-মার্ককে মালামাল সরবরাহের নামে নন-ফান্ডেড দেড় হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের অনুসন্ধান প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাবে দীর্ঘ দুই বছর পর শুরু হয়।

হল-মার্ক কেলেঙ্কারিতে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে প্রতিষ্ঠানটির (হল-মার্ক) নামে বিপুল পরিমাণ অর্থছাড়ের পাশাপাশি পণ্য সরবরাহের নামে কিছু বিলের বিপরীতে ৩৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকেও অর্থ তুলে নেওয়া হয়। বিলগুলোর বিপরীতে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল শাখা থেকে এসব বাণিজ্যিক ব্যাংককে স্বীকৃতিপত্র দেওয়া হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে হল-মার্কের নামে যে পরিমাণ অর্থছাড় হয়েছে, সেটা ফান্ডেড। আর এ প্রক্রিয়ায় অন্য ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের কাছে যা পাবে, তা নন-ফান্ডেড।

সোনালী ব্যাংকের তদন্তে নন-ফান্ডেড অংশের দেড় হাজার কোটি টাকার বিপরীতে মোট দুই হাজার ১৮৬টি বিল জাল-জালিয়াতিপূর্ণ বলে শনাক্ত করা হয়েছে। এসব বিলের বিপরীতে ৩৭টি ব্যাংকের ১১০টি শাখা থেকে সেই দেড় হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়। তবে বিলের বিপরীতে অর্থছাড় করা হয়নি, যা সোনালী ব্যাংকের জন্য নন-ফান্ডেড।