‘হঠাও ডুম্বুর বাঁধ’
ভারতের অবৈধ বাঁধ বিরোধী ইনকিলাব মঞ্চের লংমার্চ শুরু-
বিশেষ প্রতিনিধি/কুমিল্লা প্রতিনিধি : বাংলাদেশ-ভারত আন্তঃসীমান্ত নদীতে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারতের অবৈধ বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ অভিমুখে লংমার্চ করছে ইনকিলাব মঞ্চ। শুক্রবার সকালে রাজধানীর শাহবাগ থেকে শুরু হয় এই লংমার্চ। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি বলেন, ‘ভারতের সাথে বাংলাদেশের অসংখ্য নদীর সংযোগ আছে৷ তারা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশকে না জানিয়ে এসব নদীতে বাঁধ নির্মাণ করেছে। যতগুলো বাঁধ নির্মাণ করেছে, তা ভেঙে ফেলতে হবে৷’
কর্মসূচি অনুযায়ী, লং মার্চটি যাত্রাবাড়ি চৌরাস্তা ও চান্দিনায় একটি পথসভা করে। এরপরে বিকালে কুমিল্লার টাউন হলে জনসমাবেশ অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। সেখান থেকে পদযাত্রা নিয়ে বিবির বাজার পৌঁছাবে লংমার্চটি। এর আগে সতর্কতা ছাড়া বাঁধ খুলে দেয়ার প্রতিবাদ করেন উপদেষ্টা নাহিদ। তিনি বলেন, সতর্কতা ছাড়া বাঁধ খুলে ভারত অমানবিক আচরণ করেছে। যাহোক, লং মার্চ শুরুর আগে শাহবাগে একটি সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ মিছিল করে ইনকিলাব মঞ্চ। এ সময় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, স্বাধীন দেশে সকল অধিকার আদায় করে নেয়ার এখনই সুযোগ৷ ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে বিপুল জনমত তৈরি করতে এই লং মার্চ করা হচ্ছে বলেও জানান তারা।
সম্প্রতি ভারত থেকে আসা ঢলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল। এই অঞ্চলের ১১টি জেলায় বন্যা ছড়িয়ে পড়লে অর্ধশতের বেশি মানুষ নিহত হয়। আর ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা কয়েক লাখ। অভিযোগ উঠেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের এমন পরিস্থিতি। তবে ভারত সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, বাংলাদেশের বন্যা গোমতির নদীর ওপর নির্মিত ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে হয়নি।
গত ২২ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন বলেন, ‘কোনো ধরনের আগাম সতর্কতা ছাড়া বাঁধ খুলে দিয়ে ভারত অমানবিক আচরণ করেছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে।’
এর একদিন পর ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ এ অভিযোগ অস্বীকার করে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমরা যদি অমানবিক হতাম, তাহলে অনেক আগেই সেটা হতে পারতাম–বিদ্যুৎ দেওয়া বন্ধ করে দিয়ে, কারণ বিদ্যুৎ বাবদ প্রায় ১৮০ কোটি ভারতীয় টাকা তাদের কাছে আমাদের বকেয়া আছে। তাও নিয়মিত ৫০-৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা সরবরাহ করে যাচ্ছি। অথচ আমাদের নিজেদের রাজ্যের বহু জায়গায় বিদ্যুৎ নেই এখন।’