স্ত্রীর পরকীয়া মানতে পারেনি-পরে সিরিঞ্জাঘাত প্রেমিককে-
মীরা নায়ার : স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা-পরকীয়া মানতে পারেনি-স্বামী। এর জিঘাংসায় পরে সিরিঞ্জাঘাতে প্রেমিককে মেরে ফেলেন স্বামী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তবে মারাত্মক কোনও অস্ত্র নয়, সামান্য একটি সিরিঞ্জ দিয়েই শত্রুকে সরিয়ে দিল স্বামী। দু’দিন নিখোঁজ থাকার পরে গত ১৯ তারিখ খড়দহের কল্যাণগড়ের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় জয়ন্ত ভট্টাচার্যের দেহ। মৃতের স্ত্রী জুঁই ভট্যাচার্য অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামীকে খুন করা হয়েছে। জয়ন্তবাবুর সহযোগী মিতা আচার্য ও তার স্বামী সমর আচার্যর বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তোলেন জয়ন্তদেবীর স্ত্রী।
তদন্তে নেমে প্রথমেই জয়ন্তবাবুর সহযোগী মিতাদেবীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় মিতা স্বীকার করে, তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার চেষ্টা করেন জয়ন্তবাবু। যা মানতে পারেনি তার স্বামী সমর। এর পরে শ্রাবণী নামে এক মহিলার মাধ্যমে বশিকরণের টোপ দিয়ে জয়ন্তবাবুকে ডেকে পাঠানো হয়। সোদপুর থেকে একটি গাড়িতে তোলা হয় জয়ন্তবাবুকে।
গাড়ির ভিতরে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল মিতার স্বামী সমর এবং তার সহকারীরা। অভিযোগ, এর পরে জয়ন্তবাবুকে জোর করে মদ্যপান করানো হয়। তার পর ফাঁকা সিরিঞ্জ দিয়ে জয়ন্তবাবুর হাতের শিরা এবং হৃদপিণ্ডের কাছে ইঞ্জেকশন দিয়ে এয়ার বাবল ঢোকানো হয় জয়ন্তবাবুর শরীরে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে জয়ন্তবাবুর গলায় তারের ফাঁসও লাগানো হয়। শেষে দেহ ফেলে দেওয়া হয় খড়দহের কল্যাণগড়ের কাছে একটি পুকুরে।
পরে মিতাকে জেরা করে তার স্বামী সমর আচার্য, খুনে জড়িত শ্রাবণী নন্দী, বিশ্বনাথ নন্দী-সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করেই এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের জোন-২-এর ডেপুটি কমিশনার ধ্রুবজ্যোতি দে।
পুলিশের সন্দেহ, কাজ হাসিল করার জন্য নিজেদের সহকারীদের নগদ টাকাও দিয়েছিল সমর। টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছিল একজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই খুনে যারা যুক্ত, তাদের স্পষ্ট ধারণা ছিল, শরীরের কোথায় ফাঁকা সিরিঞ্জ দিয়ে ইঞ্জেকশন দিলে মানুষের মৃত্যু হতে পারে।