সৌরভ গাঙ্গুলির গোপন ইনিংস
মীরা নায়ার : ভারতের অন্যতম সেরা বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান তিনি। কিন্তু তা বলে বিতর্ক থেকে তিনি রেহাই পেয়েছেন এমনটা নয়। এমনকী বিতর্ক হানা দিয়েছে তার ব্যক্তিগত জীবনেও। সৌরভ গাঙ্গুলি নাম জড়িয়েছে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক সংক্রান্ত বিতর্কে। স্ত্রী ডোনা ছাড়া অন্য নারীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে তার জীবনে- এমন কথা শোনা গিয়েছে সংবাদমাধ্যমে। যার সঙ্গে জড়িয়েছে তার নাম তিনিও নামজাদা নায়িকা। স্বভাবতই এই ঘটনা নিয়ে জলঘোলাও হয়েছে বিস্তর। কিন্তু প্রকৃত ঘটনাটা কী?
ঘটনার সূত্রপাত ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে। ভারতের চেন্নাইয়ের বেশ কিছু সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয় এই মর্মে যে, সৌরভ এবং দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমা ও বলিউডের জনপ্রিয় নায়িকা নগমাকে নাকি একসঙ্গে দেখা গেছে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের শ্রীকালহস্তি মন্দিরে। তারা নাকি রাহু-কেতু সর্পদোষ নির্বাণ পুজা দিতে গিয়েছিলেন। এই পুজা দেওয়া হয় কুমারী মেয়েদের বিবাহের বাধা কাটানোর উদ্দেশ্যে।
সেখানকার সংবাদপত্রগুলো দাবি করে, দু’জনের আলাপ ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ চলাকালীন। এরপর দু’জনকে একসঙ্গে মন্দিরে দেখা যাওয়ার পর মিডিয়া জল্পনা শুরু করে দেয় যে, সৌরভ আর নগমার মধ্যে প্রণয়পর্ব চলছে দীর্ঘদিন ধরেই, এবং শীঘ্রই সেই সম্পর্ক পরিণতি পেতে চলেছে বিবাহে।
কিন্তু কোনও কোনও প্রশ্নের সদুত্তর এসব সংবাদমাধ্যম কোনও দিনই দিতে পারেনি। যেমন, সৌরভ আর নগমার মতো নামজাদা দুই ব্যক্তিত্ব যদি ইংল্যান্ডে দেখা সাক্ষাৎ করেই থাকেন তাহলে কীভাবে তারা সংবাদমাধ্যমের চোখ এড়ালেন? তারা একসঙ্গে পুজা দিতে গেছেন বলেই তারা বিয়ে করতে চলেছেন এমন আজগুবি সিদ্ধান্তে সংবাদমাধ্যম কীভাবে পৌঁছাল তারও কোনও ব্যাখ্যা নেই। সৌরভ যে নিছক বন্ধু হিসেবেই নগমার সঙ্গে মন্দিরে পুজা দিতে যেতে পারেন, তা একবারও মনে হয়নি মিডিয়ার?
সৌরভের পরিবার তার বিরুদ্ধে উঠা এই বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে। আর সৌরভ সমস্ত কুৎসার জবাব দেন খেলার মাঠে। ২০০১ সালে সৌরভের নেতৃত্বে নিজেদের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জেতে ভারত। স্বাভাবিকভাবেই মিডিয়ায় জয়জয়কার পড়ে যায় সৌরভের। সৌরভ-নগমা বৃত্তান্ত ক্রমশ থিতিয়ে আসে সংবাদমাধ্যমে।
পরবর্তীকালে এই বিষয়ে মিডিয়ায় আর তেমন চর্চা হয়নি। সৌরভ তার জীবনের আরও অনেক বিতর্কের মতো এই বিতর্ককেও সামলেছেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। খেলার মাঠে তার সাফল্যই হয়ে উঠেছে তার প্রধান পরিচয়। মিডিয়ায় তার বিরুদ্ধে কুৎসা যত না হয়েছে, প্রশংসা হয়েছে তার শতগুণ।