সৌন্দর্যের লীলাভূমি সেন্টমার্টিন লন্ডভন্ড
টেকনাফ প্রতিনিধি : সৌন্দর্যের লীলাভূমি সেন্টমার্টিন লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপে এক হাজারেরও অধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ উপকূল অতিক্রম করার সময় লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায় সৌন্দর্যের লীলাভূমি প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন।
এসময় ঝড়ে সেন্টমার্টিনে হাজারখানেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও শতাধিক গাছ উপড়ে পড়েছে। এতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়। অনেকেই দ্বীপের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া শাহপরীর দ্বীপে ৮ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর আহমেদ জাতিরকন্ঠকে বলেন, “ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ সেন্টমার্টিন দ্বীপকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। এ দ্বীপে প্রায় হাজারের মত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়ে আহত হয়েছেন অনেকে। এ দ্বীপে মানুষদের খাবার ও পানি সংকট রয়েছে। প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া দ্বীপের প্রায় ২০টি নৌকা ও ট্রলার বিধ্বস্ত হয়েছে।’
সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে টেকনাফ উপজেলার জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, দক্ষিণ জালিয়াপাড়া, পুরান, মুণ্ডাল ডেইল, পুরানপাড়া, ডেইল্লর বিল, মহেষখালিয়াপাড়াসহ সব গ্রামই লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
সেন্টমার্টিনের নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার নেই। বিশুদ্ধ পানি নেই। শিশুরা কাতর হয়ে পড়েছে। ঝড়ের কারণে খাবার সংগ্রহে বাইরে যাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া গত দু’দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় টেকনাফ থেকে পণ্যসামগ্রী আনাও সম্ভব হয়নি।’
টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ জানিয়েছেন, টেকনাফ উপজেলায় প্রায় পাঁচ হাজারের মতো ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপে। ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ হোসেন সিদ্দিক জানান, ‘মোরার’ আঘাতে টেকনাফ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৪ হাজার ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সাড়ে ১৩ মেট্রিট টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
এদিকে, কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, ‘মোরা’ ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার বেগে টেকনাফে ও ১১৪ কিলোমিটার বেগে সেন্টমার্টিনে আঘাত করে। এ ছাড়া কক্সবাজারে ১১৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর সংকেত দেখানো হয়েছে।