‘সেকেন্ড রিপাব্লিক’ অযৌক্তিক অর্থহীন: ফরহাদ মজহার
বিশেষ প্রতিনিধি : বিশিষ্ট লেখক গবেষক বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘দয়া করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে বিপথে পরিচালিত করবেন না। রবিবার রাত ৮টা ৫৮ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।তিনি বলেন, একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো গণপরিষদ নির্বাচন হয়নি। ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার কারনে আন্তর্জাতিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিশাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেও আভ্যন্তরীণ ভাবে বাংলাদেশের জনগণ নিজেরা গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের জন্য একটি গঠনতন্ত্র (Constitution) প্রণয়ন ও রাষ্ট্র গঠন করতে পারে নি। ডক্টর কামাল হোসেনের মুসাবিদা করা ও পদ্মশ্রী আনিসুজ্জামানের সংস্কৃত ও অর্ধতৎসম শব্দে ভারাক্রান্ত ইংরেজ সাহেব ও হিন্দু পণ্ডিতের তৈয়ারি অবোধ্য বাংলায় লেখা তথাকথিত বাহাত্তর সালের সংবিধান বাংলাদেশের জনগণের ওপর দিল্লি চাপিয়ে দিয়েছিল।
অর্থাৎ বাংলাদেশের ইতিহাসে বাংলাদেশের জনগণ কখনই প্রথম বা ‘ফার্স্ট রিপাব্লিক’ গঠন করতে পারে নি। যেখানে প্রথম রিপাব্লিকই গঠন করা যায় নি সেই ক্ষেত্রে জুলাই গণভ্যুত্থানের পর আকস্মিক ভাবে ‘সেকেন্ড রিপাব্লিক’ গঠনের দাবি অযৌক্তিক, অর্থহীন এবং অনৈতিহাসিক। তাছাড়া পাশ্চাত্যে বিশেষত ফরাসি দেশের ইতিহাসে ‘সেকেন্ড রিপাব্লিক’-এর ইতিহাস চরম ব্যর্থতার ইতিহাস। তারপরও সেকেন্ড রিপাব্লিকের দাবি তোলার ওটাই কারন: বাহাত্তরে দিল্লির চাপিয়ে দেওয়া সংবিধানকে বৈধতা দেওয়া, দিল্লির তাঁবেদারি করা।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র-তরুণরা পরিষ্কার ভাবে সবসময়ই বাংলাদেশের জনগণের জন্য নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধানের কথা বলেছেন। জনগণও নিজেরা নিজেদের জন্য নতুন গণতান্ত্রিক গঠনতন্ত্র (Constitution) প্রণয়ন করতে চায়। প্রজাতন্ত্র (Republic) আর গণতন্ত্র (Democracy) কি সমার্থক ? না। ছাত্র তরুণরা কি গণতন্ত্র চান না? তাই কি? তাহলে কথা নাই বার্তা নাই ‘সেকেন্ড রিপাব্লিক’-এর কথা বলা হচ্ছে কেন? তাও আবার ইংরেজিতে। আমরা কি ফরাসি নাকি ইংরেজ?
পোস্টের শেষে তিনি অনুরোধ রেখে বলেন, দয়া করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে বিপথে পরিচালিত করবেন না।