• শুক্রবার , ১৫ নভেম্বর ২০২৪

সেই নেতার অপকর্ম ধামাচাপা’য় হাইমচরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া


প্রকাশিত: ৩:০৯ এএম, ৩ ফেব্রুয়ারি ১৭ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৫৭ বার

haimchor chairman-www.jatirkhantha.com.bd
চাঁদপুর প্রতিনিধি : কোমলমতি স্কুল-ছাত্রদের পিঠে ওঠা সেই রসিক নেতার বিরুদ্ধে মামলার এবার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে সেখানে।চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় শিক্ষার্থীদের পিঠকে সেতু বানিয়ে জুতা পায়ে তার ওপর 11দিয়ে ওপর দিয়ে হাঁটার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ওই এলাকায়।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারীর সমর্থকরা তার পক্ষে মানববন্ধনের প্রস্তুতি নেয়। এ সময় আওয়ামী লীগের একাংশ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা চালানো হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
12
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাইমচর থানা রোডে মানববন্ধন করতে রওয়ানা হন নূর হোসেন পাটওয়ারীর সমর্থকরা। এ সময় পথে থাকা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাজাহান মিয়া তাদের উদ্দেশে বিভিন্ন মন্তব্য করেন। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান মিয়া ও বিএনপি নেতা জলিল মাস্টারের নেতৃত্বে কিছু লোক লাঠিসোটা নিয়ে এগিয়ে আসলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে নূর হোসেন সমর্থকরা উপজেলা সদরের আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে এসে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পর ওই পক্ষ সেখানে গিয়ে তাদের ধাওয়া দেয়, পরে শুরু হয় পাল্টা ধাওয়া।13

এক পর্যায়ে নূর হোসেন পাটওয়ারীর সমর্থকরা আওয়ামী লীগ অফিস ছেড়ে যেতে বাধ্য হন বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ সময় আওয়ামী লীগের একাংশ ও বিএনপি নেতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অফিসে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করারও অভিযোগ উঠেছে।

পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হাইমচর থানার এসআই নূর মিয়া জানান, দু’পক্ষের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। তবে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) হাইমচর উপজেলার নীলকমল ওছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী। ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় কয়েকটি ইভেন্টের মধ্যে একটি ছিল প্রতীকী সেতু তৈরি করে তার ওপর দিয়ে চলাচল।

ক্রীড়ানুষ্ঠানের এক পর্যায়ে স্কুলছাত্রদের শরীরে পদ্মাসেতু তৈরি ও তা পরিদর্শনের জন্য প্রধান অতিথি নূর হোসেনকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে আহ্বান জানানো হয়। এ সময় তিনি প্রতীকী সেতু তথা শিক্ষার্থীদের শরীরের ওপর দিয়ে হেঁটে যেতে আপত্তি জানান।

কিন্তু স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রদের অনুরোধের ভিত্তিতে উপজেলা চেয়ারম্যান সেখানে ওঠেন এবং শিক্ষার্থীদের শরীরের ওপর দিয়ে হেঁটে ওই ‘সেতু’ পার হন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে ওই ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কারও দেন।

সূত্র জানায়, এর শুরু ২০০৪ সালে।তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস একইভাবে এ ধরনের মানবসেতু পার হন। একইভাবে আরেক বছর স্কুলের প্রধান শিক্ষকও এ ইভেন্টের এভাবে ‘সেতু’ পার হন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, ২০০৩ সালের পর থেকে প্রতি বছরই এ ইভেন্ট চলে আসছে।

এবারের এ ঘটনা তদন্ত করতে এক সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনা তদন্ত করবেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) সৈয়দা সারওয়ার জাহান। এ ঘটনায় ওই স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী, স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।