সূর্য ভিলায় অভিযানে সেই নারী জঙ্গি নিহত-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, আশকোনার জঙ্গি আস্তানায়
অভিযান শেষ হয়েছে। এ অভিযানে দু’জন নিহত, একজন আহত ও চারজন আত্মসমর্পণ করেছে। নিহতরা হচ্ছে জঙ্গি সুমনের স্ত্রী ও এক তরুণ। আহত শিশুটি আজিমপুরে নিহত জঙ্গি ইকবালের ছেলে আবির। নিহতদের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
এছাড়াও চার আত্মসমর্পণকারী হচ্ছে রূপনগরে নিহত মেজর জাহিদের স্ত্রী শিলা ও তার সন্তান এবং জঙ্গি মুসার স্ত্রী তৃষা ও তার সন্তান।
শনিবার বিকালে পৌনে চারটায় ঘটনাস্থলেেউপস্থিত হয়ে এক তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটা থেকে রাজধানীর আশকোনায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ওই বাড়িটিতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের সোয়াত টিম।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘটনার পুরো বিবরণ দেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের অবস্থান জানতে পেরে পুলিশ এখানে অভিযান চালায়। বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল জঙ্গি মুসা। আমরা জঙ্গিদের আহ্বান করেছি, তোমাদের অবস্থান থেকে সারেন্ডার করো। পুলিশ বাহিনী নানাভাবে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হচ্ছিল। তারা কী করবে, কী করবে না এমন অবস্থায় ছিল।
তিনি জানান, মেজর জাহিদের স্ত্রী ও মেয়ে ছিল এখানে। এই জায়গাটি ভাড়া করেছিল মুসার স্ত্রী ও মেয়ে। প্রথমে দু’জন আত্মসমর্পণ করেছে। তারা দু’জনই শিশু। এরপর আরও তিনজন বাকি থেকে গিয়েছিল। তারা কিছুতেই আত্মসমর্পণ করছিল না। ওই তিন জনের মধ্যেও ছিল একজন শিশু।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, আমাদের পুলিশ বাহিনী তাদের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করেই যাচ্ছিল। তারা চরম ধৈর্য দেখিয়েছে। তাদের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করতে করতেই এক সময় সুমনের স্ত্রী হঠাৎ করে বেরিয়ে আসার কথা বলে। শিশু মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে আসে সে। তার গায়ে সুইসাইডাল ভেস্ট বাধা ছিল।
তাতে তাজা গ্রেনেড ছিল। পুলিশ তাকে ওই ভেস্ট পরে না আসার জন্য চ্যালেঞ্জ করে। কিন্তু ওই নারী ভেতরে গিয়ে আবার বেরিয়ে আসে। এক পর্যায়ে সুইসাইড ভেস্টের সুইচ ধরে টান দেয়। এতে বিস্ফোরণ হয়। সঙ্গে থাকা ওই মহিলা তাৎক্ষণিক মৃত্যুবরণ করে। সঙ্গে থাকা শিশুটি গুরুতর আহত হয়। পুলিশ ওই শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
এরপরও ভেতরে একটি ছেলে ছিল। সে কিছুতেই আত্মসমর্পণ করছিল না। তাকে আত্মসমর্পণের অনুরোধে কাজ না হলে পুলিশ ভেতরে (কাঁদানে) গ্যাস নিক্ষেপ করে। এরপর সে গুলি করতে শুরু করে। তার কাছে গ্রেনেড ছিল। সেগুলো ছুড়তে শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশ তার অবস্থান লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করলে ভেতর থেকে গুলি বন্ধ হয়। ভেতরে তাকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
তবে বাসাটির ভেতরে অসংখ্য গ্রেনেড রয়েছে। কতগুলো রয়েছে আমরা জানি না। ভেতরে অস্ত্রও থাকতে পারে। আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল টিম সেখানে গিয়ে দেখবে ভিতরে কী কী আছে। এখন কাউকেই ভেতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা বিস্তারিত জানতে পারলে জানাব।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজকের অপারেশনের পরিসমাপ্তি ঘটেছে। এখন বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা ভেতরে ঢুকে সেগুলো ক্লিয়ার করবে।