• মঙ্গলবার , ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

সুপার মডেলের স্টাইল


প্রকাশিত: ৩:১০ পিএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ১৪ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩০৯ বার

আসিফ আজিমের কাছে প্রশ্ন, আপনার পছন্দের পোশাক কী? প্রশ্নটা কি একটু বোকা বোকা শোনাচ্ছে? হতেও পারে। দেশের চেয়ে দেশের বাইরে বেশি পরিচিতি এই বাংলাদেশি সুপার মডেলের। গায়ে যে পোশাকই জড়িয়ে নেন তিনি, সেটাই তো চোখে পড়ার কথা। কিন্তু প্রায় এক দশক ধরে ভারতের মুম্বাইয়ের বাসিন্দা এই নামি সুপার মডেলের নিজস্ব স্টাইল ভাবনাটা কী?
বিগ বস রিয়েলিটি শোতে বিগ বসের ঘরে আসিফ আজিমকে যেমন দেখেছেন দর্শকেরা, পর্দার বাইরের আসিফের সঙ্গে তার পার্থক্য প্রায় নেই বললেই চলে। ক্যাজুয়াল স্টাইলই তাঁর পছন্দ। তবে জুতা আর রোদচশমার প্রতি আছে বাড়তি আকর্ষণ। জানালেন, অন্তত শ-খানেক জুতা আছে তাঁর। বেশির ভাগই ডিজেল ব্র্যান্ডের। একসময় পরতেন স্নিকার বা কেডস। এখনকার পছন্দ বুট। কেন? একটু হেসে বললেন, ‘ওসব কম বয়সে পরতাম। এখন আমার যা বয়স তাতে মনে হয় বুটটা ক্যারি করতে পারি।’
ফরমাল পোশাকে যে তাঁকে দারুণ মানায়, এটা তাঁর ভক্তদের মতোই তিনিও বেশ ভালোই জানেন। তবে ফরমাল ধাঁচের পোশাক উপলক্ষ অনুযায়ী পরা হলেও, তাঁর প্রিয় নয় তেমন। জিনস-টি-শার্টের সঙ্গে জ্যাকেট, এ ধরনের পোশাকেই সব সময় স্বচ্ছন্দ তিনি।
বেশ সকালেই শুরু হয় তাঁর দিন। ‘সকালে ঘুম থেকে উঠলে দিনটা অনেক লম্বা মনে হয়। কাজ নিয়ে চিন্তা তেমন থাকে না। গুছিয়ে করা যায় সবকিছু।’
সকাল হওয়া দেখতে ভালো লাগে এই সুপার মডেলের। ‘সকালের সূর্যটা থেকে যেন বাড়তি শক্তি পাওয়া যায়। দিনের আলো দেখলেই তো মন ভালো হয়ে যায়।’ রাতে যে সময়েই ঘুমাতে যান, সকালে ওঠা চাই তাঁর আগেভাগেই।
বাংলাদেশে বেশ কদিন ধরে থাকায় নিয়মিত জিমে যাওয়া হচ্ছে না, এ আফসোস আছেই তাঁর। প্রতিদিন অন্তত ৪৫ মিনিট শরীরচর্চা করা চাই তাঁর। তবে এ জন্য কোনো ট্রেনারের সাহায্য নেন না তিনি। ‘বিউটিফুল বডি, এই ধারণা বোঝেন না অনেক ট্রেনার। ওদের বাউন্সার বডি বানিয়ে দেওয়ার ঝোঁকটা থাকে বেশি।’ বললেন আসিফ।
কোনো ডায়েট চার্ট মানা হয় না তাঁর। তবে চিনি, কোমলপানীয় এসব থেকে দূরে থাকেন যতটা পারেন। দেশে এলেই নাকি চা খাওয়া হয় বেশি। সেটাও আবার একদম ‘দেশি চা’, মানে বেশি দুধ দিয়ে কড়া চা আরকি।
মাছ পছন্দ তাঁর। মুম্বাইতে মাছ খাওয়ার সুযোগ কমই পান বাংলাদেশের ছেলে। ফল-সবজি বেশি খাওয়া হয়, মাঝেমধ্যে মুরগি। ‘ওখানে বাড়ির কাজকর্মে সাহায্য করেন একজন। তিনি আবার প্রায়ই নিজ থেকেই ছুটি নিয়ে নেন। রান্নাটা বেশির ভাগ সময় তাই নিজেই করি।’ বললেন আসিফ।
সাদামাটা জীবনযাপনেই অভ্যস্ত তিনি। তাই বলে পার্টি-আড্ডায় অংশ নেন না তা-ও নয়। যত হই-হুল্লোড়ই করুন, বাড়ি ফিরে নিজের মতো একটু সময় কাটানো চাই তাঁর। আর সে সময়ের সঙ্গী গান। ‘লালনগীতি ভাওয়াইয়া এসব গান ভালো লাগে খুব। কেবল বাংলাদেশের লোকগান নয়, নানা দেশের লোকসংগীতের মধ্যে কোথায় যেন একটা মিল পাই।’ বলছিলেন আসিফ।
এবার দেশে এসেছেন ছুটি কাটাতেই। কিন্তু সেখানেও অবসর বলতে গেলে নেই। কাজের চাপ তো আছেই। কাজের মতোই আসিফের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে পরিবারকে সময় দেওয়াটাও। আলাপটা তাই আর বেশি দীর্ঘ হলো না। বাড়িতে মা অপেক্ষা করছেন। পরদিন সকালে আবার নকশার ফটোসেশন। আসিফকে তাই উঠতেই হলো।
মেহেরপুরের আমঝুপি গ্রামের ছেলে আসিফ আজিম পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে। মুম্বাইয়ে কাজ করেছেন ফ্যাশন ডিজাইনার মনীশ মালহোত্রা, সব্যসাচী মুখার্জি, রোহিত বালসহ ভারতের অনেক শীর্ষ ফ্যাশন ডিজাইনারদের সঙ্গে। সর্বভারতের ‘ফিটেস্ট মেল মডেল’দের তালিকায় তাঁর অবস্থান এখন চার। ফোর্ড, মটোরোলা, রেমন্ড, হেড অ্যান্ড শোল্ডারের মতো বহু বড়সড় ব্র্যান্ডের মডেল হয়েছেন। বিশ্বখ্যাত সাময়িকী হ্যালো এবং ভোগ-এ (অস্ট্রেলিয়ান, জার্মান ও ইতালিয়ান সংস্করণ) প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ছবি।