সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে বন্যা যাদের শনাক্ত করেন তাদের কাউকে ধরেনি পুলিশ
অনলাইন ডেস্ক রিপোর্টার : ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের পর আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের পুলিশ বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ তার স্ত্রী বন্যা আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি৷ এমনকি খুনিদের ধরার ব্যাপারেও পুলিশ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে মনে করেন বন্যা আহমেদ৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। ওই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে আরো বেশকিছু বিস্ফোরক মন্তব্য৷
গতবছর ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় দুর্বৃত্তের হামলায় প্রাণ হারান অভিজিৎ রায়৷ তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়, যার দায় স্বীকার করেছে উগ্রপন্থি একটি ইসলামি গোষ্ঠী৷ সেই হামলায় গুরুতর আহত হন অভিজিতের স্ত্রী বন্যা আহমেদও।
সাক্ষাৎকারে অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বন্যা আহমেদ জানান, ঘটনার পর সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তিনি যাদের শনাক্ত করেছিলেন, তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ বরং অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে যাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, তারা কেউই সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন বলেই মনে করেন স্ত্রী বন্যা৷
পাশাপাশি ডিএনএ পরীক্ষার নামে পুলিশ কালক্ষেপণ করছে বলেও মনে করেন তিনি৷ কেননা, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল থেকে যেসব ডিএনএ আলামত সংগ্রহ করেছে, সেগুলোর সঙ্গে মেলানোর জন্য কোনো ডিএনএ ‘স্যাম্পল’ বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়নি বলে দাবি করেছেন বন্যা৷
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ পুলিশ বা কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে যোগাযোগ না রাখলেও তার গতিবিধির দিকে ঠিকই তাদের নজর রয়েছে৷ তাই মার্কিন কংগ্রেসে তিনি যখন বৈঠক করেন, তখন সেখানে হাজির ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা৷ আবার গতবছর রয়টার্স তার সাক্ষাৎকার গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র ছেলে এবং অন্যতম উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ রয়টার্সের প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগ করে মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ জানান৷
ধর্ম নিয়ে লেখালেখি করা ব্লগারদের নিয়েও কথা বলেছেন বন্যা৷ তিনি মনে করেন, এ ধরনের লেখালেখি যারা করছেন, তাদের এসব বিষয়ে আরো গভীরভাবে জেনে, লেখাপড়া করেই লেখালেখি করা উচিত৷
সরকারের উদাসীনতায় বাংলাদেশে মৌলবাদীদের হত্যাযজ্ঞের পরিধি বাড়ছে বলে মনে করেন বন্যা আহমেদ৷ এক ফেসবুক ব্যবহারকারীর এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, নাস্তিক ব্লগারদের খুন করা থেকে শুরু হলেও এখন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সংখ্যালঘু হিন্দু, সমকামী অ্যাক্টিভিস্ট কেউই বাদ পড়ছে না বলে জানান তিনি৷ ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন বন্যা আহমেদ৷