সিম নিবন্ধনে মোবাইল ফোন অপারেটরদের মহা জালিয়াতি
বিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা: সরকার গ্রাহকের হাতে থাকা প্রায় ১৩ কোটি সিমের মধ্যে এক কোটির তথ্য হাতে পেয়েছে। যার ৭৫ শতাংশই ‘সঠিকভাবে নিবন্ধিত নয়’ বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।রয়েছে নানা ধরনের জালিয়াতি।সিমের নিবন্ধন যাচাই করতে গিয়ে একটি ‘ভুয়া’ জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে ১৪ হাজার ১১৭টি সিম তোলার নজিরও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার মোবাইল অপারেটরগুলোর প্রধান নির্বাহী, ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ, এনটিএমসি ও বিটিআরসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকের শুরুতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এখন পর্যন্ত প্রায় এক কোটি গ্রাহকের নিবন্ধন যাচাই করা হয়েছে। এর মধ্যে সঠিকভাবে নিবন্ধন হয়েছে মাত্র ২৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮০টি।”প্রতিমন্ত্রীর এই হিসেবে সঠিকভাবে নিবন্ধিত হয়েছে ২৫ শতাংশের মত সিম।ভুয়া পরিচয়ে অথবা নিবন্ধন না করে সিম কিনে নানা অপরাধে ব্যবহারের অভিযোগ বাড়তে থাকায় সম্প্রতি গ্রাহকদের তথ্য যাচাই ও সিম পুনঃনিবন্ধনের নির্দেশনা জারি করে সরকার।
ওই সিদ্ধান্তের পর মোবাইল গ্রাহকদের সিমের তথ্য যাচাইয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ভাণ্ডার ব্যবহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়।তারানা হালিম বলেন, “গতকাল পর্যন্ত অপারেটররা গ্রাহকদের যে তথ্য দিয়েছে তা খুবই অপর্যাপ্ত। সব অপারেটর মিলিয়ে প্রায় ১৩ কোটি সিম আছে। এর মধ্যে মাত্র ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ সিমের তথ্য মিলেছে।”
তিনি জানান, অপারেটরদের মধ্যে এয়ারটেল দিয়েছে ১৪ লাখ চার হাজার ৯৩৮ জন গ্রাহকদের তথ্য, যা তাদের গ্রাহক সংখ্যার ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
বাংলালিংক ২৩ লাখ ৫৫ হাজার সিম নিবন্ধনের তথ্য দিয়েছে, যা তাদের মোট গ্রাহকের ৭ দশমিক ২৭ শতাংশ।সিটিসেল দিয়েছে ৪ লাখ ১৪ হাজার, অর্থাৎ ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ গ্রাহকের নিবন্ধনের তথ্য।রবি ১৮ লাখ (৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ) এবং রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান টেলিটক ১৬ লাখ (৩৯ দশমিক ৩২ শতাংশ) গ্রাহকের তথ্য দিয়েছে।
আর দেশের সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোন তাদের পাঁচ কোটির বেশি গ্রাহকের মধ্যে মাত্র ২২ লাখের নিবন্ধনের তথ্য দিয়েছে, যা গ্রাহক সংখ্যার ৪ দশমিক ০৮ শতাংশ,প্রতিমন্ত্রী তারানা বলেন, ভুয়া এনআইডি দিয়ে সিম তোলা এবং এক এনআইডি দেখিয়ে বহু সিম কেনার আরও বেশ কিছু ঘটনা নিবন্ধন যাচাই করতে গিয়ে ধরা পড়েছে।
তিনটি এনআইডি পাওয়া গেছে, যেগুলোর বিপরীতে ১১ হাজার ৮৬৬, ১১ হাজার ৩২৮ ও ৬ হাজার ১৭৯টি সিমের নিবন্ধন হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন অপারেটরের সিম রয়েছে।আগামী নভেম্বর থেকে বায়োমেট্রিক ডেটা নিয়ে সিম নিবন্ধনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হবে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, “এটি গ্রাহকদের জন্য সতর্কবার্তা। সঠিকভাবে নিবন্ধন করতে হবে। ডিসেম্বর থেকে সব অপারেটর এ পদ্ধতিতে চলে যাবে।”