সিটিটোলে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি
চাঁদাবাজি নাহলে দ্রব্যমূল্য কমবে: সাঈদ খোকন-
স্টাফ রিপোর্টার : সিটিটোলের নামে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন এমপি সাঈদ খোকন। তিনি দাবি করে বলেছেন, তিনি দীর্ঘদিন দরে এই চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসলেও তার কথায় কাজ হচ্ছে না বলে তিনি এই প্রকাশ্য চাঁদাবাজির সব তথ্য ফাঁস করে দিলেন। তিনি দাবি করেছেন চাঁদাবাজি নাহলে দ্রব্যমূল্য কমবে বলেও সাঈদ খোকন মত প্রকাশ করেন।
ঢাকার কাঁচাবাজারে সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলে মনে করেন সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, ‘আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছি। আমার সংসদীয় এলাকার থানা-পুলিশ যখন চাঁদাবাজি বন্ধ করতে যায়, তখন চাঁদাবাজরা সংশ্লিষ্ট করপোরেশনের একটা কাগজ (সিটি টোল) দেখায়, যে তারা বৈধতা নিয়ে এই চাঁদাবাজিটা করছে।আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে মিট দ্য প্রেসে এসব কথা বলেন সাঈদ খোকন।
‘এগিয়ে ছিল দক্ষিণ ঢাকা, স্মৃতির পাতায় ফিরে দেখা’ শীর্ষক এই মিট দ্য প্রেসের আয়োজন করেছে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন। এ সময় ভিডিও তথ্যচিত্রের মাধ্যমে সাঈদ খোকন তাঁর মেয়াদে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে করা উন্নয়নমূলক কাজ তুলে ধরেন।
মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় নগরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কম ছিল বলে দাবি করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও ঢাকা-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। পাশাপাশি তিনি তাঁর সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত নগরবাসীকে রেখে বিদেশে যাননি বলেও জানান।উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতির সময় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে গিয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। মিট দ্য প্রেসে বর্তমান মেয়রের নাম উল্লেখ না করে ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে তাঁর বিদেশ ভ্রমণকে ইঙ্গিত করে কথা বলেন সাঈদ খোকন।
ফজলে নূর তাপসের নাম উল্লেখ না করে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, দক্ষিণ সিটির দায়িত্বশীল এক ব্যক্তি (মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস) কয়েক দিন আগে গণমাধ্যমে বলেন, ২০১৯-এর তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪২ হাজার কম ছিল। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকায় ৫৮ হাজার ১৯৮ জন ডেঙ্গু রোগী বেশি ছিল। ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নিয়ে দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ মনগড়া বক্তব্য দিয়েছেন।২০১৯ সালে ঢাকা শহরে ব্যাপক হারে এডিস মশার বিস্তার ঘটেছিল উল্লেখ করে সাঈদ খোকন দাবি করেন, তখন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।
অবশ্য সে সময় মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের গৃহীত উদ্যোগ নিয়েও নানা মহলে সমালোচনা হয়েছিল। ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশা নিধনে ব্যর্থতার জন্য তাঁকেও দোষারোপ করেছিলেন অনেকে। মশা নিধনে ব্যর্থতার কারণে পরের মেয়াদে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন দলীয় মনোনয়ন পাননি এ নিয়েও বিভিন্ন মহলে আলোচনা ছিল।২০১৫ সালের ৭ মে থেকে ২০২০ সালের ৭ মে পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। ২০২০ সালের ১৬ মে থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের দায়িত্বে আছেন শেখ ফজলে নূর তাপস।
ঢাকায় লাঠি-বাঁশ নিয়ে চাঁদাবাজি হচ্ছে-
অনুষ্ঠানে সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আজকে শহরের বিভিন্ন মোড়ে দেখবেন, লাঠি হাতে বাঁশি বাজিয়ে রিকশা, টেম্পো, বাস, ভ্যানগাড়ি থামিয়ে সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি হচ্ছে। আমার সময় কর্তৃত্ব থাকা সত্ত্বেও আমি এই কাজ করিনি, যাতে নাগরিকদের ভোগান্তি না হয়, বিভ্রান্তির মধ্যে না পড়েন, অসহায় হয়ে না পড়েন।
ঢাকার কাঁচাবাজারে সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলে মনে করেন সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, ‘আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছি। আমার সংসদীয় এলাকার থানা-পুলিশ যখন চাঁদাবাজি বন্ধ করতে যায়, তখন চাঁদাবাজরা সংশ্লিষ্ট করপোরেশনের একটা কাগজ (সিটি টোল) দেখায়, যে তারা বৈধতা নিয়ে এই চাঁদাবাজিটা করছে। অর্থাৎ সিটি টোলের একটা প্রটেকশন তারা পায়। এই চাঁদাবাজি বন্ধ হলে কাঁচাবাজারের শাকসবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস কম দামে কিনতে পারবেন নগরবাসী।
আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সাঈদ খোকন বলেন, ‘আমার প্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি চান, তাহলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব, ইনশা আল্লাহ।’