সিংহ-সিংহীর বিয়ে-আজ রাতে বাসর..
ফিরোজ চাষী চট্টগ্রাম থেকে ফিরে : এবার সিংহ-সিংহীর বিয়ে হলো মহা-ধুমধামে। ওদের আজ রাতে বাসর হবে। বিয়ে উপলক্ষে ওদের নামও বদলে দেয়া হয়েছে। নাম রাখা হয়েছে-নোভা ও নভ। ওদরে বিয়ে উপলক্ষ্যে আজ চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা সাজানো হয়েছে। খাঁচায় নেয়া হয়েছে কাচা মাংসের কেক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নোভা ও নভ-এর বিয়ে উপলক্ষে সাজানো হয় চিড়িয়াখানা। তাদের জন্য খাঁচায় রাখা হয় কাচা মাংসের কেক। কয়েক দিন আগে বাদশাকে রংপুর থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। রাখা হয় নোভার পাশের কক্ষে। বাদশার বদলে নোভার বোন রংপুর চলে যাওয়ায় সে একা হয়ে পড়ে।
বাদশাকে কাছে পেয়ে নোভার সেই নিঃসঙ্গতা কেটে যায়। দুটির মধ্যে বেশ ভাবও হয়। এবার তাদের বিয়ের সানাই বাজাও। যেই ভাবা সেই কাজ। আজ বুধবার ধুমধামে বিয়ে হলো বাদশা আর নোভার।বিয়ের আগে অবশ্য বাদশার নাম পাল্টে নোভার সঙ্গে মিলিয়ে নভ রাখা হয়। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার আলোচিত এই নভ অর নোভা হচ্ছে দুই সিংহ ও সিংহী।
বিয়ে উপলক্ষে চিড়িয়াখানার ভেতরে-বাইরে সাজানো হয়েছে নানা রঙের বেলুন ও ফেস্টুন দিয়ে। ফেস্টুনে প্রেম ও বিয়ে-সংক্রান্ত নানা ছড়া ও গানের লাইন। আবার একটি ফেস্টুনে লেখা, ‘বোন বর্ষা চলে যাওয়ায় নোভার খুব মন খারাপ’। আরেকটি ফেস্টুনে লেখা ছিল ‘লীলাবালি’সহ বিয়ের বিভিন্ন গান। কাটা হয়েছে একটি কেকও। বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন।
সিংহ ও সিংহীর পাশাপাশি খাঁচা দুটি সাজানো হয়েছে বিয়ের সাজে। একসময় সিংহটিকে ছোট খাঁচা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বড় খাঁচায় এসে পাশের খাঁচায় থাকা নোভার দিকে ছুটে যায়। কিন্তু ভয়ে নোভা দূরে সরে যায়।
বিয়ের দাওয়াত পেয়ে এসেছিলেন বন্দর মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রী মিনু। তিনি বলেন, আগে মানুষের অনেক বিয়ে খেয়েছি। এবার সিংহের বিয়ের দাওয়াত পেয়ে আগ্রহ নিয়েই চলে এসেছি। আগে কখনো চিড়িয়াখানায় আসিনি। তাই এবার এ রকম একটি অনুষ্ঠানে এসে ভালোই লাগছে।
এই সিংহ-সিংহীর বিয়ের খবর স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় আজ অন্য দিনের তুলনায় দর্শনার্থী ছিল বেশি। এসেছিলেন সাংবাদিক, জেলা প্রশাসনের লোকজন।বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য ছিল হালকা নাশতার প্যাকেট।
চিড়িয়াখানার কিউরেটর মনজুর মোরশেদ বলেন, রংপুর থেকে আনার পরই সিংহটিকে সিংহীর পাশের খাঁচায় রাখা হয়েছে ভাব বিনিময়ের জন্য। আস্তে আস্তে তাদের এক খাঁচায় দেওয়া হবে। তবে আজ এখানে অনেক মানুষ এবং ক্যামেরা দেখে এই দুটি প্রাণী একটু গরগর করছিল।
মনজুর মোরশেদ বলেন, এ মাসের প্রথম দিকে রংপুর থেকে পুরুষ সিংহটিকে এখানে আনা হয়। বিনিময়ে সিংহী বর্ষাকে সেখানে দেওয়া হয়। এখন দুজনের বিয়ের ব্যবস্থা করা হলো। ভবিষ্যতে বংশবৃদ্ধির আশায় এ ব্যবস্থা করা হয়েছে।জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার জন্য দরপত্রের মাধ্যমে বাঘ কেনার প্রক্রিয়ার কথাও জানান।