• রোববার , ১৭ নভেম্বর ২০২৪

সাসেক্সে নেমেই কাটারের জাদুতে প্রতিপক্ষ ধূলিস্যাত করে মি.ফিজ হলেন ম্যাচসেরা


প্রকাশিত: ৪:০৪ পিএম, ২২ জুলাই ১৬ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১১৭ বার

স্পোর্টস রিপোর্টার  :   সাত সমুদ্দুর তেরো নদী পাড়ি দিয়ে মুস্তাফিজ এখন সাসেক্সে।এসেই জয় Sasex-Mustafiz-www.jatirkhantha.com.bdকরলেন সব কিছু। হিথ্রো থেকে সোজা ক্লাবের ড্রেসিংরুমে গিয়ে নিজের নাম লেখা লকারের সামনে দাড়ালেন।এরপর দ্রুত পড়ে নিলেন নিজের নামে লেখা ৯০ নম্বর জার্সি। এরপর  সাসেক্সে নেমেই কাটারের জাদুতে প্রতিপক্ষ ধূলিস্যাত করে মি.ফিজ হলেন ম্যাচসেরা

এরপর নো রেস্ট সোজা প্রাকটিস মাঠে। দুই বাংলা জয় করে এবার মি. ফিজ জয় করবেন ইংরেজদের কাউন্টি ক্রিকেট । হলোও তাই মাঠে নেমে্ই বাজি মাত। মাত্র ৪ ওভার বল করলেন। তাতেই কাফি..। ২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে প্রথম ম্যাচেই হয়ে গেলেন ম্যাচ সেরা। দলকে এনে দিলেন জয়। বুঝিয়ে দিলেন, কেন প্রতিটা মুহূর্ত মুস্তাফিজকে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ছিল সাসেক্স।

Mustafiz-in Sasex-www.jatirkhantha.com.bdমুস্তাফিজকে পেতে সাসেক্সের ব্যাকুলতা ধরা পড়ছিল স্পষ্ট। তাঁরও যেতে ‘পথে হলো দেরি’। মুস্তাফিজকে পেতেই তাই দ্রুত একের পর এক আনুষ্ঠানিকতা। ক্যামেরার সামনে ফটোসেশন, আনুষ্ঠানিক পরিচিতি, ইউটিউব চ্যানেলের জন্য সাক্ষাত্কার। সবকিছুই যেন ঘটছিল টি-টোয়েন্টির দ্রুততাতেই।

কিন্তু এসবে যে বড্ড তাঁর অস্বস্তি। কী আশ্চর্য, এত দূরদেশে খেলতে গিয়ে, বিশ্রামের খুব একটা সময় না পেতেই, একেবারে ভিন্ন কন্ডিশনে, নিজের সব সতীর্থের নামও ততক্ষণে জানা হয়েছে কি হয়নি; মুস্তাফিজ মানিয়ে নিলেন অবিশ্বাস্য দ্রুততায়।
Sasex--Mustafij--www.jatirkhantha.com.bd
আসলে হয়তো খুব বেশি কিছু করতেও হয় না তাঁর। হাতে বলটা তুলে দিলেই বাকি সবকিছু যেন মনে হয় খুব চেনা। বলটা পেলেই মনে হয় যেন তিনি তেঁতুলিয়া গ্রামের বাজারের স্কুল মাঠটাতেই বল করছেন, আসলে সেই মাঠটা ঢাকায় হোক, হায়দরাবাদে কিংবা চেমসফোর্ড!

কাল একটা নো বল করেছেন। সেটা ধরলে সব মিলিয়ে ২৫টি ডেলিভারি। ১৫টাতেই দিলেন ডট, টি-টোয়েন্টিতে যেখানে প্রতিটা ডট সোনার চেয়েও দামি; যেখানে ক্ষেত্রবিশেষে ডট বল হয়ে ওঠে একটা উইকেটের চেয়েও মূল্যবান। তা-ও কখন বল করেছেন? সবচেয়ে কঠিন সময়টাতেই। ডেভিড ওয়ার্নার সেই যে একটা পথ দেখিয়ে দিলেন; দেখে দেখে সঠিক সেই পথেই গেলেন লুক রাইট।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারটার পর বল করালেন একেবারে শেষের দিকে। স্লগ ওভারের সময়টায়। যে দুই সময়েই ব্যাটসম্যানরা থাকে সবচেয়ে মরিয়া, মারমুখো। কিন্তু তা হলে কী হবে, তিনি তো বল করছেন তাঁর তেঁতুলিয়ার মাঠে বল করার সেই আনন্দ নিয়েই! ও পাশে কে ব্যাট করছে তাতে তাঁর থোড়াই কেয়ার!
Sasex---mustafij-www.jatirkhantha.com.bd
আইপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচেই, ইংরেজিতে যোগাযোগের দূরহতম কাজটাকেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বোলিং মার্কে দাঁড়িয়ে ওয়ার্নারকে নির্দেশনা দিলেন কীভাবে সাজাতে হবে ফিল্ডিং। কী প্রত্যয়ী, আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে। লং অন ভেতরে আনো, ফাইন লেগ ডিপে পাঠাও। কালও মুস্তাফিজ মাঠে নেমেই বুঝিয়ে দিলেন, যখন তিনি বল করবেন, তিনিই রাজা। বাকিদের সেই শাসন মানতেই হবে। কোনো উপায় নেই!

চার-ছক্কার হইহই ক্রিকেটের এই সময়টায় প্রতিটা ডেলিভারি দেখারও যে অন্য রকম আনন্দ আছে, এটা তো তিনিই আবার সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন। টিভিতে দেখা যায়নি বলে একটা খামতি থেকে গেল কাল তাঁর বোলিং দেখার আনন্দটা পুরো পাওয়া গেল না বলে। লিখিত ধারাভাষ্যও ঠিক সবিস্তারে ছিল না।

কিন্তু কল্পনা করে নিতে কষ্ট হয়নি, চার বলের মধ্যে যখন ফস্টার আর টেলরকে বোল্ড করে দিলেন; কী দুর্দান্ত ডেলিভারিই না ছিল সেই দুটি। কিংবা এসেক্সের অধিনায়ক রবি বোপারা আর শেষ দিকে নামা টেন ডেসকাটকে যে ক্যাচ বানালেন, তা হয়তো মায়াবি বিভ্রম জাগানো কাটারেই। যে কাটারের ভাষা বোঝার কেরামতি হয়ে ওঠেনি স্বনামখ্যাত বড় বড় ক্রিকেটারেরও।